এরশাদ আলম, বীরভূম: গরুপাচার (Cow Smuggling Case) মামলায় জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) জেলে থাকাকালীনই এবার বীরভূমের (Birbhum) দুবরাজপুরে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগে পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য। যশপুরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি শেখ কাঞ্চন ও দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেতা পরিমল সৌয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকা ও নিজেদের সম্পত্তি বাড়ানোর অভিযোগ তুলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) উদ্দেশ্য করে লাগানো হয়েছে পোস্টার।
পোস্টারে দুই তৃণমূল নেতার সম্পত্তির খতিয়ান লেখা রয়েছে। অঞ্চল সভাপতিকে পাওয়া না গেলেও, দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভূমি কর্মাধ্যক্ষ। সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে নিজেদের পকেট ভরছেন তৃণমূল নেতারা, কটাক্ষ বিজেপির। ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা, পাল্টা দাবি তৃণমূলের।
চালকল থেকে শুরু করে প্রায় ১৭ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। একের পর এক সংস্থা। অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর, তাঁর মেয়ে ও প্রয়াত স্ত্রীর নামে একাধিক সম্পত্তি হদিশ পেয়েছে CBI। শুধু অনুব্রত মণ্ডল নয়, তাঁর দেহরক্ষী ধৃত সায়গল হোসেনেরও বীরভূমে বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
এই প্রেক্ষাপটেই অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুক বীরভূমের দুবরাজপুরের একাধিক জায়গায় পড়ল পোস্টার। বাদ গেল না তৃণমূলের পার্টি অফিসও যেখানে যশপুরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ কাঞ্চন এবং তৃণমূল পরিচালিত দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পরিমল সৌয়ের সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরে নিশানা করা হয়েছে।
পোস্টারে দাবি করা হয়েছে, শেখ কাঞ্চনের ৮০ লক্ষ টাকার বিলাসবহুল বাড়ি, ২৭ লক্ষের আম বাগান, ৪টি পুকুর এবং ১৭ বিঘা জমি রয়েছে। পাশাপাশি পরিমল সৌ-এর বাড়িতে হাড়ি ভর্তি সোনা, গোলা ভর্তি টাকা রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে পোস্টার।
কিন্তু কারা এই পোস্টার দিয়েছে, তার উল্লেখ করা না হলেও, পোস্টারটি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুবরাজপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি ভোলানাথ মিত্রকে উদ্দেশ্য করে। পাশে লেখা খেলা হবে পঞ্চায়েতে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি তৃণমূলের পার্টি অফিসের বাইরেও লাগানো হয়েছিল পোস্টারটি। যদিও পরে কেউ সেটি ছিঁড়ে ফেলেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে, বীরভূমে ১১টি কেন্দ্রের মধ্যে শুধুমাত্র দুবরাজপুরে জিতেছে বিজেপি। তবে বিরোধী কোনও দলের নাম না নিলেও, পোস্টার দেওয়ার নেপথ্যে ষড়যন্ত্র দেখছেন তৃণমূল নেতা পরিমল সাউ। বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন ধরেননি, যশপুরের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ কাঞ্চন। পোস্টার দেওয়ার নেপথ্যে কারা, তা নিয়ে জল্পনা থাকলেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই পোস্টার ঘিরেই সরগরম দুবরাজপুরের রাজনীতি।
।