গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বোলপুর: অচলাবস্থা কাটাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে, আদালতের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ বসিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হোক, আবেদন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা।


বিশ্বভারতীতে অশান্তির সূত্রপাত গত ৯ জানুয়ারি। সেদিন ছাতিমতলায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায় পড়ুয়াদের একাংশ। অর্থনীতি বিভাগের একটি ঘরের তালা ভাঙা হয় বলে অভিযোগ। এরপরই সোমনাথ সৌ, ফাল্গুনী পান এবং রূপা চক্রবর্তী নামে ৩ পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 


বিশ্বভারতীর তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে উপাচার্যের ঘরের সামনে মঞ্চ বেঁধে চলছে আন্দোলন। পাঁচদিন ধরে গৃহবন্দি উপাচার্য। সকালে দুধ-কলা-পাউরুটি আর সন্ধ্যায় মুড়ি-আলুর দম-কাঁচালঙ্কা। ঘরবন্দি উপাচার্যর কাছে খাবার পাঠালেন আন্দোলনকারীরা। যদিও এসব খাবার গ্রহণ করেননি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।  


পাঁচ দিনের মাথাতেও সমাধানসূত্র দূর অস্ত। উল্টে ক্যাম্পাসে ঢুকল পুলিশ। মঙ্গলবারই বীরভূম জেলা প্রশাসনকে ই-মেল করে নিরপাত্তা চেয়েছেন উপাচার্য। আচার্য-প্রধানমন্ত্রীকে   চিঠিতে জানিয়েছেন, তিনি বন্দি। বেরোতে পারছেন না। ভিতরে আনা যাচ্ছে না খাবার। বুধবার সকালে বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারাই ব্রেকফাস্ট পৌঁছে দেন উপাচার্যের বাসভবনের মূল ফটকে। 


এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর বাইরে থেকে দু’জন খাবার পৌঁছে দিতে গেলে বিক্ষোভাকারীরা বাধা দেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁদের দেওয়া খাবারই খেতে হবে।  সন্ধ্যায় উপাচার্যকে পাঠানো হয় মুড়ি-আলুর দম-কাঁচালঙ্কা। তাও গ্রহণ করেননি তিনি। এদিন বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে ঢোকে কংগ্রেসও। 


বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রশিদের নেতৃত্বে মিছিল করে উপাচার্যের বাসভবনের গেটের সামনে হয় সভা। সেখান থেকে উপাচার্যকে দেওয়া হয় হুঁশিয়ারি। তিনি বলেন, এই উপাচার্য বিজেপির দালাল, আপনি আগে পদত্যাগ করুন, নাহলে কীভাবে পদত্যাগ করাতে হয় বুঝে নেব, আপনি এখানে উপাচার্য, বাইরে আপনি ফকির।


ঘটনার ঘনঘটার পরেও, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মুখে কুলুপ। পাঁচ দিন ধরে ঘর থেকে বেরোননি উপাচার্য। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার শাসক দলের ছাত্র সংগঠন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিশ্বভারতীতে আন্দোলনে নামার কথা।