গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: বিদ্যালয় ছুটদের ফের বিদ্যালয়মুখী করতে শিক্ষকদের দুয়ারে বিদ্যালয় কর্মসূচি। করোনা আবহ কালে দীর্ঘ লকডাউনের পর খুলেছে বিদ্যালয়। কিন্তু বিদ্যালয় খোলার পরেও বেশ কিছু শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয় গরহাজির। লকডাউনে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার কারণে আর অভাবের তাড়নায় পড়ুয়াদের একাংশ বেছে নিয়েছে অন্য কোনো পেশা। স্কুল ছেড়ে কেউ মাছ বিক্রি করছে, কেউ অন্য কিছু। ঠিক এমনই এক পড়ুয়া  বীরভূমের (birbhum) সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত করিধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিপুর গ্রামে। যেখানে করিধ্যা জদুরায় স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণীর এক ছাত্র দেবাশিস দাস বেছে নিয়েছে মাছ বিক্রির পেশা।
অভাবের তাড়নায় বাড়িতে বাবা মা না থাকার জন্য এই পড়ুয়া বেছে নিয়েছেন এই পেশা, বলে জানিয়েছে ওই পেশা। তবে এই পড়ুয়াকে স্কুলে ফেরাতে আজ তার বাড়ি পৌঁছে যান স্কুলের শিক্ষকরা। সেখানে  তারা ওই পড়ুয়াকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের তাকে স্কুলে পাঠানোটা কতটা জরুরি। বোঝানোর পাশাপাশি তার পাশে থাকার জন্য সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়। সেই আশ্বাস পেয়ে ওই পড়ুয়া জানান আগামী দিনে তিনি অবশ্য স্কুলে উপস্থিত হবেন।এদিন এরকম একাধিক পড়ুয়ার বাড়িতে বাড়িতে যেতে দেখা স্কুলের শিক্ষকদের।


সপ্তাহখানেক হতে চলল স্কুল খুলেছে তবুও ক্লাসগুলোতে ছাত্রের সংখ্যা একেবারেই কম তাই ছাত্রদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে মাইক নিয়ে পথে নামল শিক্ষকরা। স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে অভিনব এই উদ্যোগ। স্কুল সংলগ্ন এলাকায় মাইক নিয়ে অভিভাবকদের  কাছে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠানোর অনুরোধ করছেন দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ অন্য শিক্ষকরা। মাইক হাতে  শিক্ষকরা আজ সকাল থেকে রাস্তায় নেমে দাঁইহাট শহরের পাইকপাড়া, মজিদপাড়া সহ বাজার এলাকায় প্রচার  করলেন। প্রচারের ফাঁকে অভিভাবকদের বাড়িতে গিয়ে  শিক্ষকের দল পড়ুয়া কেন স্কুলে যাচ্ছে  না তার খোঁজ খবর নিলেন।   


করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে দেড় বছর পর সরকারি নির্দেশে  স্কুল খুললেও পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার খুবই  কম। দশ দিন হয়ে গেলেও পড়ুয়ারা স্কুলে আসছে না। স্কুলে ছাত্র ফেরাতে প্রধান শিক্ষক মনোহর দাস এলাকায় মাইক নিয়ে প্রচারের পরিকল্পনা করেন।  সার্ধশতবর্ষ পার করা কাটোয়া মহকুমার দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের জনা দশেক শিক্ষক আজ দুপুর থেকে এলাকায় মাইক হাতে প্রচার শুরু করেন।দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র  সংখ্যা ১৪৯৫  জন।