ভাস্কর মুখোপাধ্যায়,বীরভূম: তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে সিউড়িতে ধুন্ধুমার, আক্রান্ত পুলিশ। অভিযুক্তকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিল স্থানীয়রা। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশের লাঠিচার্জ। আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ১ দুষ্কৃতীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর লোকেরা। দুই গোষ্ঠীর সংঘধর। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশকে আক্রমণ। লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। আগ্নেয়াস্ত্র-সহ আটক একজন।


দিকে দিকে শুধুই তৃণমূল বনাম তৃণমূল। কয়েকবছর আগের নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস হোক বা পানিহাটির কাউন্সিলর অনুপম দত্তই হোক, বারবার দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ গেছে তৃণমূল নেতাদের। এমনকী খাস কলকাতাতেও কদিন আগে তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে একই কায়দায় খুনের চেষ্টা করা হয়। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। কিন্তু মালদার ক্ষেত্রে সেই সুযোগ হয়নি জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি দুলাল সরকারের। প্রশ্ন উঠছে, বারবার কেন টার্গেট করা হচ্ছে শাসকদলের নেতাদের? বিরোধীদের অভিযোগ, এই ঘটনাগুলির নেপথ্যে রয়েছে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। যদিও শাসকদল বলছে, খুনের নেপথ্যে কে জড়িত তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব পুলিশের। 


কখনও পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি। কাউকে তাড়া করে দোকানের মধ্য়ে খুন। আবার কেউ গুলি না চলায় কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন। প্রত্য়েকেই তৃণমূলের দাপুটে নেতা। কেউ বিধায়ক তো কেউ দাপুটে কাউন্সিলর। কেউ আবার তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে জড়িত...জেলা সহ সভাপতি। একে একে খুন। আইনশৃঙ্খলাকে হাতের মুঠোয় ভরে দুষকৃতীদের দাপাদাপি গুলি বন্দুক যেন হাতের মোয়া । বিরোধীরা দাবি করছে, এরকম যত ঘটনা ঘটেছে, তার সিংহভাগই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। গত কয়েক বছরে কখনও উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি কখনও বীরভূমের রামপুরহাট বা কয়েক বছর আগের নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে বারবার আততায়ীদের শিকার হয়েছেন তৃণমূলের বিধায়ক থেকে কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্য থেকে নেতা। প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেছিলেন,এবার একই ঘটনা ঘটেছে মালদায়। দুষকৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেছেন জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি দুলাল সরকার। আর এই ঘটনার নেপথ্যেও দলেরই কারও হাত রয়েছে বলে ইঙ্গিত করেছেন নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী। 


আরও পড়ুন, 'অভয়ার পরিবারের কথায় শুধু সংবাদমাধ্যম গুরুত্ব দেয় ,আর কেউ গুরুত্ব দেয় না..' !


রাজ্য মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রী ও সভানেত্রী  চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছিলেন,'কাউকে ভাড়া করে তো কেউ নিয়ে এসেছে। কেউ তো ভাড়া করেছে। সেই 'কেউ'টাকে খুঁজতে হবে। পুলিশই খুঁজবে। গোষ্ঠীকোন্দল জানি না। যদি কোথাও কেউ কিছু করে থাকে, সে যেখানে যে গোষ্ঠীর যে হোক না কেন, অন্য রাজনৈতিক দল হোক, সাধারণ লোক হোক, কিংবা গোষ্ঠী হোক তা ধরা পড়বে।' বছরের প্রথম দিন তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে আরাবুল ইসলাম ও সওকত মোল্লার দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়! পরের দিন মালদায় খুন হন তৃণমূলের দাপুটে নেতা! বীরভূমে আবার তৃণমূল নেতা প্রাণনাশের আশঙ্কা করে অভিযোগের আঙুল তুলছেন তৃণমূলেরই নেতাদের দিকে! যার তিনদিন বাদে তাঁর বাড়ির সামনে আবার বোমাবাজিও হয়েছে!