আবির ইসলাম, বীরভূম: দুর্নীতি প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুরু বিতর্ক। বিতর্কে জড়ালেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) উপাচার্য। বাইশে শ্রাবণ উপলক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মরণে হওয়া একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নাম না করে পার্থ-অর্পিতার প্রসঙ্গ টেনে আনার অভিযোগ উঠেছে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।  


কী নিয়ে বিতর্ক:
একটি ভিডিও ঘিরে এই বিতর্কে জড়িয়েছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ২২ শ্রাবণ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। সেই উপলক্ষ্যে শান্তিনিকেতনের কাচমন্দিরে, বিশ্বভারতীর তরফে আয়োজিত হয়েছিল বিশেষ স্মরণ অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও আপলোড হয়েছে। তাতে উপাচার্যকে দুর্নীতি ইস্যুতে বলতে শোনা গিয়েছে। একাংশের দাবি, দুর্নীতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নাম না করে পার্থ-অর্পিতা কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনেছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেই ভিডিওতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, 'আমি যে মুহূর্তে জনগণের সাহায্য নেব অর্থাৎ ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করলাম, অতএব সরকারি জিনিসপত্র নেওয়া তো আমার জন্মগত অধিকার হয়ে গেল! এর সঙ্গে আজকের পশ্চিমবঙ্গের কথা উল্লেখ করছি। জনগণের টাকা আমি নিজের মতো করে করে নেব, এটা অন্যায় কীসের! অনেক সময় কী হয়, এই নেওয়ার যে প্রচেষ্টা বা নেওয়ার যে ইচ্ছা, তাতে বদহজম হয়ে যায়। এই বদহজমের প্রকাশ আপনারা আজকের পশ্চিমবঙ্গে দেখছেন।'


তৃণমূলের কটাক্ষ:
বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবসে, উপাসনাগৃহে উপাচার্যের এই বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই মন্তব্য়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জেলা তৃণমূল (TMC)। বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সম্পাদক দেবব্রত সরকার বলেন, 'কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস ২২ শ্রাবণ। স্থান, কাল পাত্র বোঝেন না। এটা ওঁর পক্ষেই সম্ভব। এটা আদালতের বিচারাধীন বিষয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় একশোর মধ্যে ৯৮তম স্থানে। তা নিয়ে উনি কিছু বলেন না।'


পাশে বিজেপি:
যদিও এই বিষয়ে কার্যত উপাচার্যের পাশেই দাঁড়িয়েছে বিজেপি (BJP)। বোলপুর শহরের বিজেপির সহ-সভাপতি কাঞ্চন ঘোষ বলেন, 'পার্থ ৫০ কোটির দুর্নীতি করেছেন। তৃণমূল সরকার দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তৃণমূল যতই বলুক উপাচার্য রাজনীতি করছেন, দুর্নীতির যা প্রকোপ, সবাই প্রতিবাদ করবেন।'


এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খোদ উপাচার্য। তিনি বলেন, 'ক্ষমতার যে বণ্টন সমাজ ব্যবস্থায় রয়েছে, তার বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ সেটাও কিন্তু রাজনীতি। আমি যখন এই কথাগুলো বলি মন্দিরের মধ্যে বা যে কোনও অনুষ্ঠানে, আমি কিন্তু রাজনীতি করি সেই অর্থে।'


ইতিমধ্যেই বারবার বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। নানা বিষয়ে শাসক দলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বেঁধেছে উপাচার্যের। ফের আরও একবার সেই ঘটনা।  


আরও পড়ুন: দলীয় পদ দিতেও টাকা! ভাঙচুর বিধায়কের বাড়ি