প্রকাশ সিন্হা পার্থপ্রতিম ঘোষ ও নান্টু পাল, রামপুরহাট (বীরভূম): রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে (Rampurhat Case) নিহতদের DNA পরীক্ষা (DNA Test) করাবে CBI। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, এর আগে মৃতদেহ শনাক্ত (identification) করতে দেওয়া হয়নি তাঁদের। সিবিআই সূত্রের খবর, সেই কারণে DNA পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজই রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে আরও ৯ জনকে হেফাজতে নিয়েছে সিবিআই।
রামপুরহাটে সিবিআই তদন্ত
রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অস্থায়ী ক্যাম্পে শুক্রবার জেরা করা হয় তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন-সহ ৬ অভিযুক্তকে। পাশাপাশি এদিনই রামপুরহাটের দমকলের OC এবং রামপুরহাট থানার ২ পুলিশ কর্মীকেও ডেকে পাঠায় সিবিআই।
সূত্রের খবর, হত্যাকাণ্ডের রাতে কী হয়েছিল, মুখোমুখি বসিয়ে তাঁদের কাছে জানতে চান গোয়েন্দারা। গত ২১ মার্চ রাতে ও তার পরের দিন দমকল ও পুলিশের যে কর্মীরা বগটুইতে গিয়েছিলেন, তাঁদের নিয়ে এদিন রাত সাড়ে ৯টার সময় ঘটনাস্থলে যান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।
সোনা শেখ-সহ যে ৩ জনের বাড়িতে প্রথম আগুন লেগেছিল, সেই বাড়িগুলি তাঁরা ঘুরে দেখেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা।
এর পাশাপাশি এই ঘটনায় জেল হেফাজতে থাকা আরও ৯ অভিযুক্তকে এদিনই হেফাজতে নেয় সিবিআই। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের তদন্তে, এক নাবালক বাদে মোট ১৯ জনকে হেফাজতে নিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: Hooghly: চন্দননগরে গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে মৃত্যু ভাই-বোনের
রামপুরহাটকাণ্ডে CBI তদন্তের সিদ্ধান্ত
২১ মার্চ রাতে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুনের পরই বগটুইয়ে পুড়িয়ে মারা হয় একাধিক জনকে। ঘটনায় নিহতের দেহের DNA পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নিল CBI। গত ২১ মার্চ রাতে ভাদু শেখের খুনের পরই বগটুইয়ে গ্রামে একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সোনা শেখের বাড়ি থেকে অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
নিহতদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, পুড়ে যাওয়া মরদেহ তাঁদের শনাক্ত করতেই দেওয়া হয়নি।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই, অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহতদের DNA পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে CBI সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের সময়েই নিহতদের DNA’র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এবার নিহতদের পরিবারের সদস্যদেরও DNA’র নমুনা সংগ্রহ করবে CBI। এরপর DNA’র নমুনা মিলিয়ে দেখার জন্য পাঠানো হবে দিল্লির ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে।
সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার আগেই রামপুরহাটে নিহতদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাঁদের মধ্যে স্বজনহারা মিহিলাল শেখ আগেই দাবি করেন, দূর সম্পর্কের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি মৃতদেহগুলি শনাক্ত করেছেন। যাঁকে তাঁরা কেউ চেনেনই না!
রামপুরহাট হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহগুলি শনাক্তকরণের ব্যবস্থা করে পুলিশ। সেই সময় নিহতদের আত্মীয় আলাউদ্দিন শেখের বয়ানেও বিতর্ক দানা বেধেছিল।
বিতর্কের আবহেই DNA পরীক্ষা করে নিহতদের পরিচয় সুনিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিল সিবিআই।