ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, নানুর : প্রতিনিয়ত এগোচ্ছে বিজ্ঞান । কিন্তু, প্রগতির এই যুগে এখনও একাংশের মধ্যে কুসংস্কার রয়ে গেছে। তারই আরও একটা দৃষ্টান্ত দেখা গেল নানুরের (Nanoor) হোসেনপুর গ্রামে। ওঝার 'পরামর্শে' সাপে (Snake) কেটে মৃত এক যুবককে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জলে ডুবিয়ে রাখা হল। মৃত যুবকের শরীরের নিম্নাংশে যখন পচন ধরা শুরু করেছে, তখন পুলিশ এসে তড়িঘড়ি মৃতদেহ উদ্ধার করে। পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। মৃত যুবকের নাম সুজন থান্ডার (২৪)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার বিকালে বাড়ির পাশে আখের খেতে গিয়েছিলেন সুজন। খেতের পাশে পুকুরের পাড় দিয়ে আসার সময় তাঁকে সাপে কামড়ায়। প্রাথমিকভাবে বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি তিনি। পরে সন্ধ্যার দিকে সুজন বমি করতে থাকেন। তাঁকে গ্রামের পাশে এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বারবার বমি করতে থাকায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা হয় গ্রামে।
ওঝার 'পরামর্শ'-
এরপর বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান থেকে এক ওঝা আসে। সে 'পরামর্শ' দেয়, মৃতদেহে প্রাণ ফিরবে, যদি তা ১০ ঘণ্টার বেশি জলে ডুবিয়ে রাখা হয়। এর পরে বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় মাটি খুঁড়ে তৈরি করা হয় ছোট্ট পুকুর। সেখানে পলিথিন রেখে জল ঢেলে সুজনের মাথা বের করে মৃতদেহের বাকি অংশ জলে ডুবিয়ে শুরু হয় ওঝার 'তুকতাক'। দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে মন্ত্রপাঠ। গ্রামের মানুষ এবং মৃতের পরিবার অপেক্ষা করতে থাকে সুজনের দেহে প্রাণ ফিরবে বল।
এর মধ্যে নানুর থানার পুলিশ খবর পেয়ে গ্রামে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। প্রথমে গ্রামের মানুষ পুলিশকে বাধা দেয়। আর এই সুযোগে ওঝা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে এলাকায়।
আরও পড়ুন ; দোমহনির রেল দুর্ঘটনাস্থলে 'ভূতের ভয়', কুসংস্কার বলে দাবি বিজ্ঞান মঞ্চের
দোমহনির রেল দুর্ঘটনাস্থলে 'ভূতের ভয়'
সূর্য ডুবলেই এলাকায় গা ছমছমে ভাব! গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, তাদের নাকি অনুভব করা যায়! তাই সন্ধে নামলে জলপাইগুড়ির দোমহনির রেল দুর্ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলেন বাসিন্দারা। এ সব কুসংস্কার বলে দাবি বিজ্ঞান মঞ্চের। সচেতনতামূলক প্রচার শুরু করছে রেল ও প্রশাসন।