গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: দাসকল গ্রামের সিংহ বাড়ির পুজো প্রায় ৩১০ থেকে ৩১৫ বছরের পুরনো। কিন্তু দুর্গার আদল একেবারে ভিন্ন। দেবীর যে মূর্তি আমরা দেখতে অভ্যস্ত তা হল, দশভূজা রূপ। দশ হাতে দশ অস্ত্র, আর ত্রিশূলে বিদ্ধ মহিষাসুর। কিন্তু এই বাড়ির দুর্গা দশভূজা নন। শ্রী শ্রী চণ্ডির দ্বিতীয় অধ্যায়েও উল্লেখ রয়েছে- 'দেবীমাহাত্ম্যে মহিষাসুরসৈন্যবধো'। কিন্তু সিংহ বাড়ির একচালায় নেই কোনও মহিষাসুর।
সূর্যবংশীয় ক্ষত্রিয় বংশ পরস্পরায় চলে আসছে এখানকার পুজো। তবে এখানে দেবী দুর্গা রূপে পূজিত হন না, পূজিত হন মা অভয়া রূপে। দেবীর এখানে দুটি হাত, কোনো অস্ত্র নেই। তিনি এখানে অভয়দান করছেন। এখানকার প্রতিমা একচালার। লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশ থাকলেও, নেই মহিষাসুর। বলা হয় মহিষাসুর বধ করার আগের মুহূর্তে দেবীর এইরূপ।
আরও পড়ুন, পাহাড়ের গুহায় পূজিত হন লালজলের 'দেবীদুর্গা', রোমহর্ষক সেই উৎসবের প্রাচীন কাহিনী
বাংলায় এই অভয়া মূর্তি পুজোর প্রচলন খুব কমই রয়েছে। দেবী এখানে পঞ্চমুন্ডির বেদীর উপর অধিষ্ঠান করেন। রথযাত্রার দিন মূর্তিতে প্রথম মাটি দেওয়ার প্রচলন রয়েছে এখানে। এলাকায় এই পুজো সিংহ বাড়ির পুজো নামেই পরিচিত। বর্তমানে লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ তথা রানার সিংহের বাড়ির পুজো এটি। পুজোর কয়েকদিন আচার-অনুষ্ঠানের কোন খামতি থাকে না।
আরও পড়ুন, উদ্যোক্তা গ্রামবাসীরাই, খয়রাশোলের ১৫০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোর নেপথ্যে এক অজানা ইতিহাস
বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সিংহ বংশের বংশধররা উপস্থিত হন এই সিংহ বাড়ির পুজো দালানে। পুজো কয়েকদিন এলাকার মানুষের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন থাকে সিংহ বাড়িতে।