ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: বীরভূমের ৫টি সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম সাঁইথিয়ার নন্দীকেশ্বরী। কথিত আছে, সাধক বামাক্ষ্যাপা এই মন্দিরে পুজো দিয়ে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। সাঁইথিয়া জায়গাটি আগে নন্দীপুর নামে পরিচিত ছিল সবার কাছে। প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে দেবী নন্দীকেশ্বরীর নাম অনুসারে এই শহরের নাম হয়েছিল নন্দীপুর।
৮০ দশকের সাঁইথিয়া শহরের ব্যবসায়ীরা সতীপীঠ নন্দিকেশ্বরীর অনেক সংস্কার করে বর্তমান যে মন্দিরটি রয়েছে সেই মন্দিরটি গড়ে তুলেছেন। একটি বিশাল বড় বটগাছ ছাতার মতঘিরে রেখেছে মন্দিরের প্রাঙ্গণকে। এখানে দেবী মূর্তি বলতে গেলে আছে শুধুমাত্র একটি পাথর। পাথরের গায়ে রয়েছে দেবীর সোনালী তিনটি চোখ আর মাথায় রূপালি মুকুট। মায়ের মূর্তিটি কালো পাথরের কিন্তু বর্তমানে এর রং প্রায় লাল। কারণ ভক্তরা প্রার্থনার জন্য পাথরের গায়ে সিঁদুর দিয়ে থাকেন। তাই লাল।
প্রসঙ্গত, গা ছমছমে পরিবেশে কয়েকশো বছরের প্রকাণ্ড বটগাছের তলায় বন্দেমাতরম মন্ত্রে এখনও পুজিত হন ভবানী পাঠকের কালী। একটা সময় ছিল যখন চারিদিকে জঙ্গল গা ছমছমে পরিবেশ খড়ের চালায় মায়ের মূর্তি প্রকাণ্ড এক বটগাছের তলায়। পিছনে রয়েছে প্রকাণ্ড এক জলাশয় নিচে ছিল সুরঙ্গ তার ধ্বংসাবশেষ এখনও দেখতে পাওয়া যায়।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে এখনো এই মন্দির চত্বরে আছে মানুষের এবং শেয়ালের মাথার খুলি, সেই বট গাছও এখনও রয়েছে। রয়েছে জলাশয়ও। শুধু আশেপাশের জঙ্গল অনেকটাই পরিষ্কার করে এখন গড়ে উঠেছে বসতি বহুতলাবাসন ইট কার্ড কংক্রিটের নগরায়ন। শতাধিক বছর আগে ভবানী পাঠক দেবী চৌধুরানী এই মন্দির শুরু করেছিলেন বলে কথিত আছে।
আরও পড়ুন, দীপাবলিতে পেট্রোলের দরে বদল ! ১২ জেলায় কমল দর, আজ জ্বালানি ভরাতে খরচ কত ?
আরও জানা যায়, দেশ স্বাধীনে যুক্ত বিপ্লবীরা এই মন্দিরে আস্তানা গড়ে ছিলেন এবং তারাই এই পুজো করতেন। সেজন্য এই মন্দিরে এখনো বন্দেমাতরম মন্ত্র এই পুজো শুরু হয়, তবে সেই গা ছমছমে পরিবেশ অতটা না থাকলেও সেই প্রকাণ্ড বটগাছ এখনও জানান দেয়, কয়েক দশক আগেও জায়গাটা কিরকম ছিল, মন্দিরের পুরোহিত মিলন চট্টোপাধ্যায় জানালেন, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে জানা গেছে তন্ত্রমতো এখানে পুজো হয় এবং যেহেতু বিপ্লবীরা এই পুজো করতেন সেজন্য সেই বন্দেমাতরম মন্ত্র এখনো সেই নিয়মই চলে আসছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।