কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: 'দল (TMC) কাউকে হাজিরা দিতে যেতে বারণ করেনি। যদি দল কাউকে যেতে বারণ করত, তা হলে এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল থেকে একটা রিপোর্ট (report) সহজেই বের করে দেওয়া যেত যে অনুব্রত মণ্ডল (anubrata mondal) এত অসুস্থ, যেতে পারবেন না।' তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতির গ্রেফতারি নিয়ে এবিপি আনন্দের সামনে অকপট কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র (madan mitra)।
মদনের কথায় দলনেত্রীর সুর...
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জুলাই মাসেই ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই মামলায় গ্রেফতার করা হয় তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও। বিষয়টি নিয়ে প্রথম কয়েক দিন নীরব থাকার পর বঙ্গসম্মান মঞ্চ থেকে তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছিলেন, দুর্নীতিকে সমর্থন করেন না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে 'বিচারে আইন যা রায় দেবে, আমাদের দল মেনে নেবে। বিচারে যত চরমই শাস্তি হোক, আমরা কোনও হস্তক্ষেপ করব না। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেও আই ডোন্ট মাইন্ড!' এদিন দাপুটে বীরভূম জেলা সভাপতির গ্রেফতারি ঘিরেও একসুর শোনা গেল কামারহাটির বিধায়কের গলায়।
কী বললেন?
'দলের সুপ্রিমো ও সেকেন্ড ইন-কমান্ড বলেছিলেন, কোনও দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। গরু অনেক বড় ব্য়াপার। ওটা কাঁধে তুলে নাকি অন্য কোনও ভাবে পাচার করে, তা নিয়ে আমার কোনও ধারণা নেই। তবে আমাকে সিবিআই, ইডি যত বার ডেকেছে, সাড়া দিয়েছি।' এর পরই সংযোজন, 'দল কিন্তু কখনও কাউকে বলেনি যেও না। যদি দল কাউকে যেতে বারণ করত, তা হলে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে একটা রিপোর্ট সহজেই বের করে দেওয়া যেত যে অনুব্রত মণ্ডল এত অসুস্থ, যেতে পারবেন না। কিন্তু এসএসকেএম তাঁকে স্থিতিশীল বলেছে, পার্থকে স্থিতিশীল বলেছে।' সে না হয় দলের কথা। কিন্তু বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে বার বার তলব করা সত্ত্বেও গেলেন না কেন? প্রশ্ন করা হলে অবশ্য মদনের উত্তর, 'সেটা উনি বলতে পারবেন।' সঙ্গে সংযোজন, 'আমাকে বলা হয়েছিল উনি সুস্থ নন। সংবাদপত্রেও তাই দেখলাম। এখনও গ্রেফতার করা হয়েছে ওঁকে। দেখা যাক।'
গরু পাচার কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলকে মোট দশ বার তলব করেছিল সিবিআই। তার মধ্যে মাত্র এক বার হাজিরা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। হালে তাঁকে ফের তলব করা হলে জানিয়েছিলেন, একই দিনে এসএসকেএমের ডাক্তারদের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত চেক আপ রয়েছে তাঁর। সেই চেক-আপে অবশ্য জানানো হয়েছিল, ভর্তি হওয়ার দরকার নেই তাঁর। এর পর বোলপুর ফিরে আসেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। সেখানে ফের তলবের নোটিস দিতে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। তার পর যা ঘটেছে, সেটা মোটামুটি জানা। বিষয়টি নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। যদিও এ ব্যাপারে নিজস্ব স্টাইলে অবস্থান স্পষ্ট করলেন মদন। বললেন, 'বিজেপি হঠাৎ বলতে শুরু করেছে, ডিসেম্বরে ওরা লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন একসঙ্গে করবে। আমাদের ২২০ জন বিধায়ক রয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করবেন নাকি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেবেন নাকি দুর্ঘটনায় মারা যাবেন তাঁরা নাকি আত্মহত্যা করবেন?'
দুর্নীতির প্রশ্নে ও বিরোধীদের পাল্টা দেওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূল বিধায়কের অবস্থান স্পষ্ট। কিন্তু তা হলে কি এবার কেষ্ট-র সঙ্গে দূরত্ব বাড়াবে তৃণমূল? দেখতে চায় বাংলা।
আরও পড়ুন:ফের বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস একাধিক জেলায়