ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম:  বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশার বালেশ্বরে বীরভূমের ১৯ জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক রাখার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও পরিবারের অভিযোগ। এর ফলে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চিন্তিত পরিবারের লোকজন। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার দিঘায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যেরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি শাসকদলের বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটিকে জানিয়েছেন। 

এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, বালেশ্বরে আটকে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে নলহাটি ২ ব্লকের বারা ২ পঞ্চায়েতের সুকরাবাদ গ্রামের ১৬ জন এবং পাইকর থানা এলাকার রামপুরে ও বুলচাঁদপুরের ৩ জন আছেন। আটকে রাখা শ্রমিকদের পরিবারের অভিযোগ, ''আমাদের জানানো হয়েছে যে স্বামী-সহ কয়েক জনকে ৫ দিন থেকে আটক করে রাখা হয়েছে। মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। আমরা সকলেই চিন্তায় আছি।''

কিছুদিন আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন পেটের টানে কাজে গিয়েও শান্তি নেই। এবার ভিন রাজ্যে অত্যাচারের স্বীকার হচ্ছেন বাঙালি শ্রমিকরা। ফের এই অভিযোগ তুললেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বাংলা ভাষায় কথা বললে বিজেপি শাসিত রাজ্যে আটকে রাখা হচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বলা কি অপরাধ? আজকেও রাজস্থানে ৩০০ লোককে আটকে রেখেছে। বাংলা ভাষায় যারা কথা বলেন তাঁরা কি অন্যায় করেছেন? যাঁরা গেছেন তাঁরা তো বৈধ নাগরিক। বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি নাগরিক বলা হচ্ছে। তাঁরা কেউ বাংলাদেশি নন, পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা, বৈধ পরিচয়পত্র আছে। খুব ভয়ানক খেলা হচ্ছে, জানি না প্রধানমন্ত্রীর নজরে আছে কিনা।'' 

কিছুদিন আগে একটি খবর প্রকাশ্যে এসেছিল যে ভিনরাজ্য়ে পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু। শ্রমিকের পরিবারের দাবি, কয়েকবছর ধরে ব্যাঙ্গালোরে এক ঠিকাদারের কাছে কাজ করতেন বছর ৩৩-এর সতীশ। এ বছর পুজোর ছুটি কাটিয়ে তিনি কাজের জায়গায় ফিরে যান। পরিবারের দাবি, রবিবার ঠিকাদারের কাছ থেকে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুসংবাদ মেলে। পরিযায়ী শ্রমিককে খুনই করা হয়েছে বলে পরিবারের সন্দেহ। পরিবারের অভিযোগ শনিবার রাতে ফোনে কথা হয় তার পর রবিবারে মৃতার খবর দেওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে খুন করা হয়েছে। দেহ উদ্ধারের পর থেকে তার মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। দেহ ফিরিয়ে আনতে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে গোটা পরিবার কাঁকসা থানার দ্বারস্থ হন।