ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতন: অবসর নিতেই বিশ্বভারতীর (Visvabharati University) প্রাক্তন উপাচার্যকে পুলিশের নোটিস। ফলক-বিতর্কে এবার বিশ্বভারতীর সদ্য প্রাক্তন উপাচার্যকে পুলিশের তলব। প্রাক্তন উপাচার্যের বাড়িতে গিয়ে নোটিস ধরাল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। এব্যাপারে এখনও বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর (Bidyut Chakraborty)কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। 


বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্যকে পুলিশের নোটিস: ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের সম্মান পাওয়ার পরে বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস জুড়ে বসানো হয়েছে ফলক। সম্মান-প্রাপ্তির ফলকে আচার্য-প্রধানমন্ত্রী এবং উপাচার্যের নাম থাকলেও, কেন কবিগুরুর নাম নেই- এই প্রশ্ন ঘিরে হইচই শুরু হয়েছে বিতর্ক। গতকাল বুধবার বিশ্বভারতীতে উপাচার্যর কর্মজীবনের শেষ হয়েছে। আর ঠিক তার পরের দিনই সদ্য প্রাক্তন উপাচার্যকে নোটিস ধরাল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। কবিগুরুর নাম ছাড়াই কার নির্দেশে ফলক? এই প্রশ্নের উত্তর জানতেই বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


মঙ্গলবার বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৫ পাতার চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। যেখানে তিনি লিখেছিলেন, যাঁরা রাবীন্দ্রিক বলে নিজেদের দাবি করেন, তাঁদের অনেকেই ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য ওই রাস্তা বেছে নেন। বিশ্বভারতী দুর্নীতি ও স্বার্থসিদ্ধির আখড়া৷ যাঁরা মৌচাকে ঢিল মেরেছেন তাঁদেরকে ভুগতে হয়েছে৷ এমনকি গুরুদেব এবং তাঁর সুযোগ্য সন্তান শ্রী রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অশ্রুজলে শান্তিনিকেতন ছাড়তে হয়েছিল৷ উপাচার্য চিঠিতে লিখেছেন, বিশ্বভারতী নরম মাটি৷ যিনি উপাচার্য আসেন, তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বোঝার আগেই আক্রান্ত হন৷ তিনি বিশ্বভারতী উন্নতির জন্য যা করা উচিত তার জন্য পর্যাপ্ত সময় পান না। উপাচার্যর এই চিঠি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন আশ্রমিকরা। মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য লিখেছিলেন, বিশ্বভারতীর পরিবর্তন হচ্ছে, তাই যাঁরা এর থেকে ফায়দা নিতেন, তাঁরা ভীত এবং প্রদীপ নিভে যাবার আগে যেমন দপ করে জ্বলে ওঠে, তাই তাঁরা এবার শেষ কামড় দিচ্ছেন৷ এখানেই শেষ নয়, নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়েও খোঁচা দিতে ছাড়েননি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এমনকী খোঁচা দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী শিল্প-সাহিত্য চর্চা নিয়ে।


ফলক পরিবর্তন যে করা হবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়ে মঙ্গলবার বিশ্বভারতী (Visvabharati University) জানিয়েছিল – “রাবীন্দ্রিকরা যতই গলা ফাটাক, আচার্য তো নরেন্দ্র মোদি-ই। এর কোনও পরিবর্তন করা যাবে না। ফলকে নামগুলি অপ্রাসঙ্গিক বলা, মূর্খামি নয় কি? সামান্য ফলকে গুরুদেবের নাম না থাকলেও তিনি এবং তাঁর পিতৃদেব মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কি কখনও অস্বীকার করা যাবে?’’