ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, ও এরশাদ আলম, বীরভূম: উপাচার্য পদ থেকে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সরতেই শান্তিনিকেতনে পুরনো পরিবেশ ফেরাতে উদ্যোগী হলেন আশ্রমিক, প্রাক্তনী, বিশ্বভারতীর কর্মী, অধ্যাপক এবং ছাত্রছাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা ছাতিমতলায় পুস্পস্তবক দিয়ে প্রণাম জানানোর পাশাপাশি উপাসনা গৃহ পর্যন্ত রবীন্দ্র সংগীত করতে করতে আসেন। তাঁদের বক্তব্য এত দিন শান্তিনিকেতনে দমবন্ধ অবস্থায় ছিল। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সরেছেন। এবার শান্তিনিকেতনে পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে।


যা যা হল...
১৪ দিন পর তৃণমূলের আন্দোলনও উঠল এখানে। ফলক বিতর্ক ঘিরে শান্তিনিকেতনে চলা দীর্ঘ ১৪দিনের আন্দোলন বৃহস্পতিবার তুলে নিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানান, পুরনো উপাচার্য গিয়েছেন, নতুন উপাচার্যকে ফলক সরিয়ে ফেলার জন্য সময় দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই ঐতিহ্য ফেরাতে তৎপরতা শান্তিনিকেতনের অন্দরে। উপাচার্য পদ থেকে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সরতেই বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় দফতর গঙ্গাজলে ধুল ফেলেন তৃণমূল নেতৃত্ব এবং বিশ্বভারতী কর্মীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর পাপ থেকে বিশ্বভারতীতে শুদ্ধ করতেই এই গঙ্গা জল দেওয়া হচ্ছে। এর পর কেন্দ্রীয় অফিস প্রাঙ্গণে সবুজ আবীর খেলেন তৃণমূল নেতৃত্ব এবং বিশ্বভারতীর কর্মীরা। তাৎপর্যপূর্ণভাবে শুধু তৃণমূল নয়। উপাসনা গৃহের সামনে গোবর জল নিয়ে শুদ্ধিকরণের পথ নেয় বিজেপিও। উপাচার্য সরলে বিশ্বভারতীকে গোবর জল দিয়ে শুদ্ধ করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। বৃহস্পতিবার তাঁর অনুগামীরাই উপাসনা গৃহের সামনে জমায়েত হয়ে গঙ্গা জল দেন।


বিতর্ক...
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অতীতে নানা কারণে রাজ্যের সংঘাত চরমে উঠেছিল। হালে ফলক-বিতর্ক ঘিরে তা তুঙ্গে ওঠে। তৃণমূলের সমালোচনার জবাবে আক্রমণ শানায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ফলক পরিবর্তন হবে না, বিতর্কের মধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছিল বিশ্বভারতী। 'রাবীন্দ্রিকরা যতই গলা ফাটান, আচার্য তো নরেন্দ্র মোদি-ই। এর কোনও পরিবর্তন করা যাবে না। ফলকে নামগুলি অপ্রাসঙ্গিক, বলা মূর্খামি নয় কি?', এই ধরনের জবাব ঘিরে তীব্র হয় জল্পনা। শুধু তাই নয়। রবীন্দ্রনাথের নাম উল্লেখ ছাড়াই বিশ্বভারতীতে ফলকের একাধিক উদাহরণ দিয়েও পাল্টা আক্রমণ শানায় বিশ্বভারতী। ফলক-বিতর্কে রবীন্দ্র-প্রেম নিয়েও প্রশ্ন ছিল তাদের। এর মধ্যেই খবর, বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর চাকরির মেয়াদ বাড়ছে না। বিশ্বভারতীর অন্তর্বর্তী উপাচার্য হচ্ছেন সঞ্জয়কুমার মল্লিক।


আরও পড়ুন:যতই গলা ফাটান রাবীন্দ্রিকরা, মোদিই আচার্য, ফলক বিতর্কে পাল্টা আক্রমণে বিশ্বভারতী