সন্দীপ সরকার, পার্থপ্রতিম ঘোষ ও প্রকাশ সিন্হা, কলকাতা: বগটুইয়ে তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান খুনের পরই, শুরু হয়েছিল আগুনে পুড়িয়ে হত্যালীলা। কিন্তু, পঞ্চায়েত উপপ্রধানের খুনের নেপথ্যে কি রয়েছে বখরা সংক্রান্ত বিবাদ? পাথর ও কয়লা পাচারের টাকা নিয়ে গন্ডগোল থেকেই কি গোটা ঘটনার সূত্রপাত? নিহত ভাদু শেখের বাবা তেমনটাই দাবি করেছেন।



ধৃত তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেন ও নিহত তৃণমূলের উপ প্রধান ভাদু শেখের দুজনেরই রয়েছে প্রাসাদোপম বাড়ি। এলাকায় প্রবল প্রতিপত্তি। এসবের নেপথ্যে কি বালি, কয়লা এবং পাথর পাচারের বখরার বিপুল টাকা? বখরার টাকা নিয়ে গন্ডগোলের জেরেই কি খুন হতে হল ভাদু শেখকে? নিহত তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখের স্ত্রী এবং বাবা সরাসরি এই অভিযোগই করছেন। 


বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৃণমূল নেতা আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, আনারুলের অধীনে ৯টা পঞ্চায়েত এলাকা পড়ে। এর মধ্যে একটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন ভাদু শেখ। অভিযোগ, এই পঞ্চায়েত এলাকাগুলো দিয়ে বালি, কয়লা এবং পাথর পাচারের জন্য মোটা টাকা আসত পঞ্চায়েতে। 


আরও পড়ুন, রাজমিস্ত্রি থেকে দাপুটে তৃণমূল নেতা, কীভাবে রকেটের গতিতে উত্থান আনারুল হোসেনের?


৯টা পঞ্চায়েত থেকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুলের কাছে মাসে মাসে মোটা টাকা আসত বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে খবর, বীরভূমের বিভিন্ন এলাকায় কয়লা এবং পাথর পাচারের টাকা ওড়ে। এই কারবার যার, টাকাও তার। তাই পাচার-কারবার কব্জা করতে খুন-জখমও নতুন নয়। সোমবার যে বাড়িতে সাতজনকে আগুন লাগিয়ে হত্যা করা হয়, সেই বাড়ির মালিক শেখ সোনার বোনের দাবি, ভাদু শেখ এবং আনারুল হোসেনও ব্যতিক্রম ছিলেন না। 


শেখ সোনার বোন হাসিনা বিবি বলেন, "ভাদু আর আনারুল একই। এরা খুন করত, আমার ভাইয়ের নামে দোষ পড়ত।" বখরা বিবাদে খুন তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ? খুন-আগুনের শিকড় লুকিয়ে সেখানেই? গতবছর খুন হয়েছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান ভাদু শেখের দাদা বাবর। এরপরই রামপুরহাটের SDPO’র কাছে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন ভাদু শেখ। 


SDPO এই চিঠিটা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদরকে ফরওয়ার্ড করেন। শেষমেশ অবশ্য ভাদু শেখকে খুন হতে হল। আর তারপরই জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল আটজনের।