আবীর ইসলাম ও রঞ্জিত হালদার, বোলপুর-তারাপীঠ: হু হু করে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ (Daily COVID Cases)। এমন পরিস্থিতিতে পর্যটন ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি চলছে। দিঘা, দার্জিলিংয়ের পর এ বার শান্তিনিকেতনেও (Santiniketan) হোটেল-রিসর্ট বুক করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হল। অনলাইন-অফলাইন, কোনও ভাবেই হোটেল-রিসর্ট বুক করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। শান্তিনিকেতনকে কার্যত পর্যটকশূন্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


বড়দিন এবং বর্ষবরণের পর থেকেই রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। তার জেরে জেলাগুলিতেও সতর্কতা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বোলপুর মহকুমা শাসক অয়ন নাথের তত্ত্বাবধানে এসডিপিও অভিষেক রায়, বোলপুর এবং ইলামবাজারের বিডিও, আইসি, ওসিদের নিয়ে জরুরি বৈঠক হয়৷ সেখানে ডাকা হয় হোটেল, লজ এবং  রিসর্ট মালিকদের। সেখানেই পর্যটকে রাশ টানার নির্দেশ দেওয়া হয় সকলকে। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সবরকম বুকিং বন্ধ রাখতে বলা হয়।


বোলপুরের মহকুমা শাসক অয়ন নাথ বলেন, “দিঘা, দার্জিলিং যেভাবে পর্যটকশূন্য করা হয়েছে, একই ভাবে শান্তিনিকেতন, বোলপুর, ইলামবাজারের হোটেল, লজ, রিসর্টের বুকিং বন্ধ রাখতে হবে। এক প্রকার পর্যটকশূন্য করতে হবে গোটা এলাকা। রাজ্যের মুখ্য সচিবের নির্দেশ অনুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত।”


আরও পড়ুন: Hooghly: চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে ডানকুনিতে চন্দ্রকোণার বাসিন্দার মৃত্যু


সোমবার থেকেই রাজ্যে আংশিক কড়াকড়ি চালু হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত এই কড়াকড়ি চলবে। তার আওতায় পড়ছে বোলপুর, শান্তিনিকেতন এবং  ইলামবাজারও। তার জন্য মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী শান্তিনিকেতনকে পর্যটকশূন্য করার নির্দেশ দিয়েছিলেন আগেই। সেই অনুযায়ীই শান্তিনিকেতনে হোটেল এবং রিসর্টে বুকিং বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল আপাতত।


বোলপুর এবং শান্তিনিকেতনে সব মিলিয়ে ১১২টি হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। টানা লকডাউন পর্বের পর সম্প্রতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল তারা। তাই প্রশাসনের নয়া নির্দেশে ফের সমস্যায় পড়লেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। বোলপুর শান্তিনিকেতনের হোটেল ইউনিয়নের সেক্রেটারি প্রসেনজিৎ চৌধুরী বলেন, “প্রশাসনিক বৈঠকের ঠিক হল,  অনলাইন-অফলাইন কোনও রকম বুকিং করা যাবে না। পর্যটনশূন্য করার জন্য বলা হয়েছে। সমস্যা তো রয়েছে। হোটেল না হয় বন্ধ রাখলাম। কর্মীদের নিয়ে কী করব, বুঝে উঠতে পারছি না। আশাকরি, তাড়াতাড়ি হোটেল-লজ খুলে দেওয়া হবে।”


অন্য দিকে, করোনা পরিস্থিতিতে তারাপীঠ মন্দিরেও একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি পুণ্যীর্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখ্যোপাধ্যায় বলেন, "৫০ জন পূর্ণাথী  মন্দিরে প্রবেশ করতে  ঢুকতে পারবে। মন্দির খোলা থাকছে। কোভিড বিধি মেনে।  স্যানিটাইজার ও সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে হবে।এক জায়গায় কেউ জমায়েতে করতে পারবে না। এই সব দেখার জন্য মন্দির সিকিউরিটি বাড়ানো হচ্ছে।" সেখানকার এসডিপিও সায়ন আহমেদ বলেন, "রামপুরহাট- টুরিষ্ট স্পটে  হোটেল গুলো আপাতত বন্ধ থাকবে । আর অনলাইন বুকিং করা যাবে না। আজ থেকে পূর্ণাথী দের তারাপীঠ ছেড়ে চলে যেতে হবে।"