প্রকাশ সিনহা ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা ও বোলপুর: নিচুপট্টির নীল বাড়িটা একডাকে প্রায় সকলেই চেনেন। বীরভূমের (birbhum) দাপুটে তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (anubrata mondal) বাসভবন (residence) বলে কথা। অন্য দিন বহু লোকের যাতায়াত থাকে। আজ যেন ওরই মধ্যে কিছুটা আলাদা ছবি। দলীয় কর্মীদের মধ্যে তৎপরতা, নিরাপত্তারক্ষীদের তটস্থ ভাব। কখন আসবেন ওঁরা?


দরজায় সতর্ক নিরাপত্তারক্ষী...
ওঁরা মানে সিবিআই (CBI)। গরু-পাচার কাণ্ডের অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আর এক প্রস্ত নোটিস (summon) দিতে আসার কথা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের, বলছে সূত্র। ই-মেলে আগেই পাঠিয়েছেন। তবে গোটা প্রক্রিয়ায় কোনও ফাঁক রাখতে চান না। এবার তাই সশরীরে অনুব্রতর বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে এসে নোটিস দিতে পারেন তাঁরা। সূত্রের খবর, তৃণমূল নেতা যাতে কোনও ভাবেই নোটিস পাওয়ার কথা অস্বীকার না পারেন তা নিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা। গত কাল রাত থেকেই তাই নীল বাড়ির তরজায় তটস্থ নিরাপত্তারক্ষীরা। বাড়ির ভিতর আনাগোনা বেড়েছে দলীয় কর্মীদের। 


আগামিকাল হাজিরা...
সূত্রের খবর, আগামিকাল সকাল ১১টার মধ্যে নিজাম প্যালেসে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতিকে। গত কালই তাঁর চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে নোটিস দিতে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কিন্তু তার আগেই বেরিয়ে যান অনুব্রত। সন্ধের দিকে ফিরে আসেন বোলপুরে। এবার তাই সেখানেই আসতে পারে সিবিআই। 
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় এই নিয়ে দশম বার তাঁকে তলব করা হল। এর মধ্য়ে মাত্র এক বার হাজিরা দিয়েছেন তিনি। আড়াই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ হয় সে বার। এমনকী গত কালও সিবিআই তলবে আসেননি অনুব্রত। জানিয়েছিলেন, এসএসকেএমে তাঁর পূর্বনির্ধারিত চেক-আপ রয়েছে। তবে প্রায় দু-আড়াই ঘণ্টা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর এসএসকেএম জানায়, তৃণমূল নেতার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দরকার নেই। বাড়িতেই চিকিৎসা হতে পারে। এর পর চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে ফিরে আসেন অনুব্রত। তবে মাঝখানে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন, আবার তাঁকে ডাকা হলে যাবেন কিনা জানিয়ে দেবেন। 


জিজ্ঞাসাবাদে তৎপর সিবিআই...
কিন্তু সূত্রের খবর, গরু পাচার মামলায় অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাস করতে আরও বেশি তৎপর সিবিআই। বিশেষ সিবিআই আদালতে তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট জমা পড়েছে ,সেখানেও অনুব্রত মণ্ডলের নাম ছিল। সূত্রের খবর, ইলামবাজারের গরু হাটের সঙ্গে সরাসরি অনুব্রতর যোগাযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কী ভাবে? তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এনামুল হক এবং আব্দুল লতিফের সঙ্গে ফোনে একাধিক বার কথা হত সায়গল হোসেনের। অন্তত সায়গলের কল ডিটেলস থেকে তেমনই পর্যবেক্ষণ তাঁদের। যদিও আসলে ওই ফোনে অনুব্রত কথা বলতেন বলে মনে করছে সিবিআই। তা ছাড়া গরু পাচারের টাকা বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছেছে বলেও ধারণা তাঁদের। ফলে এই মুহূর্তে তৃণমূলের নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। তাই তলব করা হচ্ছে বার বার।
বোলপুরের বাড়িতে কখন সেই তলবের নোটিস আসে, তার অপেক্ষা চলছে গত রাত থেকেই। কিন্তু তার পর কী করবেন অনুব্রত?


আরও পড়ুন:কাল ফের CBI তলব অনুব্রত মণ্ডলকে