ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: 'ভোট দিতে বাড়ি থেকে বের হলে হাত কেটে নেওয়া হবে', এই ভাষাতেই বিরোধীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার (Birbhum TMC Leader Threat) বিরুদ্ধে। নির্দিষ্ট করে বললে, অভিযোগের তির ময়ূরেশ্বর দু'নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জটিলেশ্বর মণ্ডলের দিকে। এই নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরই হইচই শুরু হয়। পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি। 


কী অভিযোগ?
লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণা হয়নি। তার আগেই রাজ্যে এসে যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় বাহিনীর। বস্তুত, এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে লোকসভা ভোটে গোটা দেশের মধ্য়ে বাংলার জন্যই সবথেকে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তার মধ্যে ময়ূরেশ্বর দু'নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তীব্র আলোড়ন ফেলেছে লাল মাটির জেলায়। অভিযোগ তিনি বলেছেন, 'কেন্দ্রীয় বাহিনী তোর বাবার বন্ধু নয়। ভোট হলেই চলে যাবে। তখন তুই বাঁচবি না। এই হুমকি এখনই দিয়ে দিতে হবে, আগামী দু -পাঁচ দিনের মধ্যে।  কারণ, ৭তারিখের মধ্যে সেন্ট্রাল ফোর্স ঢুকবে।' ভোট দিতে বেরোনো যাবে না, তিনি এমনই 'বার্তা' দিতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ। শোনা যাচ্ছে তিনি এও বলেছেন, 'বের হওয়ার দরকার নেই। ভোটে যাওয়ার দরকার নেই। ঘরে বসে থাকবি। আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করবি না। আর অপপ্রচার করলে একদম হাত কেটে নেব। একদম তোর হাত কেটে নেব। আমাদের নেত্রীর কাছ থেকে বৌয়ের জন্য ভাতা নিচ্ছিস, বাবার বার্ধক্য ভাতা নিচ্ছিস, চাল খাচ্ছিস, জমির টাকা নিচ্ছিস আর ভোট অন্য দিকে দিবি? ছেড়ে কথা কইবো না। এই হুমকি এখনই মেরে দিতে হবে, আগামী দু -পাঁচ দিনের মধ্যে। কারন আগামী ৭ তারিখের মধ্যে সেন্ট্রাল ফোর্স ঢুকবে।' এও জানাতে বলেছেন, 'কেস করে কিছু করতে পারবে না। কেস আমরা করতেই দেব না... শুধু আমাদের কানে রিপোর্টটা যেতে হবে। আমরা যা করার, করে দেব।' এই নিয়ে তৃণমূল নেতার তরফে অবশ্য এখনও পর্যন্ত কিছু বলা হয়নি। 
অভিযোগ সামনে আসতেই পাল্টা সুর গরম করেছে বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি, ধ্রুব সাহা। তাঁর বক্তব্য, 'যে হাতটা দিয়ে উনি হাতকাটার হুমকি দিয়েছেন, সেই হাতটা কাটা যাবে।' এমনিতে ময়ূরেশ্বর বিধানসভা বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। এদিনের পর অনেকেরই প্রশ্ন কেষ্ট-হীন বীরভূমের এই বিধানসভা কেন্দ্রে কি মাটি শক্ত করতে পারবে তৃণমূল?  তবে তার থেকেও বড় প্রশ্ন অন্যত্র। ভোটের আগে এই ধরনের হুমকির অভিযোগ, পাল্টা 'হুঁশিয়ারি'-র রাজনীতি কি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে? নাকি ফের পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্মৃতি ফিরে আসবে?


আরও পড়ুন:মেঘলা হলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, আজ কেমন থাকবে বীরভূমের আকাশ?