আবির ইসলাম, বীরভূম: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। কিন্তু তার আগেই বড় অঘটন নেমে এসেছে তাদের জীবনে। বীরভূমের পাড়ুই থানার কেশাইপুর গ্রামে ঘনশ্যাম কিস্কু ও জোনাকি কিস্কু ২৪ ঘণ্টা আগেই হারিয়েছে তাদের বাবাকে। বাবার মৃত্যুশোককে সঙ্গী করেই এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল ২ ছেলেমেয়ে।
একদিকে দূর্ঘটনার মৃত বাবার দেহ ময়নাতদন্ত চলছে। অন্যদিকে, জীবনের প্রথম সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দুই ছেলেমেয়ে। দূর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর খবর জেনেই পরীক্ষায় বসে ঘনশ্যাম কিস্কু ও জোনাকি কিস্কু। সূত্রের খবর, বীরভূমের পাড়ুই থানার কেশাইপুরের বাসিন্দা শিবশঙ্কর কিস্কু (৪৫)। ৬ মার্চ সন্ধেয় বোলপুরের কাশিপুর সংলগ্ন এলাকায় বাইক নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় পথ দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তাঁর৷ পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়৷
বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পরে দুই ছেলেমেয়ে ঘনশ্যাম কিস্কু ও বোন জোনাকি কিস্কু। দুজনেই এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী৷ পাড়ুইয়ের কেশাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরে তারা৷ একদিকে, যখন হাসপাতালে বাবার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত চলছে৷ অন্যদিকে, আহমেদপুর জয়দুর্গা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে জীবনের প্রথম সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিল তারা৷ এদিন থেকেই শুরু হয় মাধ্যমিক পরীক্ষা৷ প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষা শেষ করেই বাড়ি ফিরে বাবার শয্যাশায়ী দেহ দেখল দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলেমেয়ে। গ্রামবাসীরাই উদ্যোগ নিয়ে পাশে দাঁড়ালো এই মর্মান্তিক ঘটনা সামাল দিতে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া। জোনাকি কিস্কু বলে, "বাবা চাইত আমরা মন দিয়ে পড়াশোনা করি। তাই মৃত্যু খবর শুনেও আমি ও বোন পরীক্ষা দিলাম।"