কলকাতা: রাস্তা ফেরত চেয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। ফলক-বিতর্কেও মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিলেন তিনি। লিখলেন, 'আপনি কান দিয়ে দেখছেন, বিশ্বভারতীর প্রকৃত চাহিদা দেখতে পারছেন না। যা দেখে আমি বিস্মিত।' চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, 'ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না থাকায় আপনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। ইউনেস্কো শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করেছে। আমরা এএসআইয়ের নির্দেশ অনুসারে কাজ করছি। খুব শীঘ্রই তার ফল আপনি দেখতে পাবেন।'


আর যা...
বিশ্বভারতীর উপাচার্য চিঠিতে আরও লেখেন, 'আপনি যদি মানুষের টাকা চুরিকেই স্বাভাবিক বলে মেনে নেন, তাহলে আপনার বিশ্বভারতীর সমস্যা বোঝার কথা নয়। আপনার দুজন সিনিয়র মন্ত্রী জেলে রয়েছেন। বীরভূমে আপনার এক বিশ্বস্তও তিহাড় জেলে আছেন। আপনার নিয়োজিত উপাচার্যও চাকরি বিক্রির অভিযোগে জেলবন্দি। আপনার দলের সবথেকে সরব সাংসদের বিরুদ্ধে এথিক্স কমিটি তদন্ত করছে। আপনার অনেক সহকর্মী শিক্ষা, কয়লা, গরুপাচার, জমি-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। যা মানুষের জন্য যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের ভাবমূর্তির বিপরীত।' সব মিলিয়ে তীব্র আক্রমণাত্মক সুর স্পষ্ট চিঠিতে। প্রসঙ্গত, ফলক নিয়ে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে বিতর্কের কেন্দ্রে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। গত কাল সে ব্যাপারে এক্স হ্যান্ডেলে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লেখেন,  'বিশ্বের হেরিটেজ শান্তিনিতেকন গড়ে তুলেছিলেন কবিগুরু। কিন্তু বিশ্বভারতীর ফলকে রবীন্দ্রনাথের নাম নেই, অথচ উপাচার্যের নাম রয়েছে!' অবিলম্বে ফলক সরিয়ে ফেলা উচিত কেন্দ্রের, এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট মুখ্যমন্ত্রীর। 


প্রেক্ষাপট...
শুধু বাংলা ও বাঙালিই নয়, গোটা দেশের গর্ব শান্তিনিকেতন।  বিশ্বকবির অমর সৃষ্টিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান দিয়েছে ইউনেসকো। তারই শ্বেত-ফলকে ফের লেগেছে বিতর্কের কালি আর রাজনীতির রং! বাঙালির প্রাণের কবি, বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠাতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই নাম নেই এই ফলকে! অভিযোগ, কেবল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম রয়েছে! এই নিয়েই কার্যত হুঁশিয়ারির সুর শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। ফলকে রবিঠাকুরের নাম লিখতে 'ডেডলাইন' বেঁধে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের এই নিয়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারির পর, শান্তিনিকেতনের কবিগুরু মার্কেটের সামনে মঞ্চ তৈরি করে ধর্নায়ও বসে তৃণমূল। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। আর সেই প্রতিষ্ঠানের প্রাণপুরুষের নামই নেই ফলকে! বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পড়ুয়াদের মধ্য়েও। চিঠিতে তারই জবাব উপাচার্যের।


আরও পড়ুন:রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর পথে বামেরা