গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতীর সাসপেন্ড হওয়া এক অধ্যাপককে ফের শোকজ করল কর্তৃপক্ষ। বিদ্যাভবনের ওই অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে এর আগে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সম্প্রতি পড়ুয়াদের আন্দোলনে তিনি সামিল হন। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, এবার তাঁকে শোকজ করে জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তিনি পড়ুয়াদের আন্দোলনে সামিল হয়েছেন? কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই শোকজ নোটিসে। 


তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন ঘিরে সম্প্রতি উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী। সম্প্রতি একাধিক ইস্যুতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পথে নামেন অর্থনীতি বিভাগের ফাল্গুনী পান ও সোমনাথ সৌ এবং কলা ভবনের রূপা চক্রবর্তী। বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ৩ বছরের জন্য ওই তিন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে শুরু হয় আন্দোলন। ২৭ অগাস্ট থেকে অবস্থানে বসেন বিশ্বভারতীর ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ। অচলাবস্থা কাটাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসকে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে আদালতের কাছে হস্তক্ষেপের আবেদন জানায় কর্তৃপক্ষ। পুলিশ বসিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হোক, আবেদন করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। 


অচলাবস্থা কাটাতে হস্তক্ষেপ করে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে উপাচার্যের বাড়ির গেটের তালা ভাঙে পুলিশ। সরিয়ে দেওয়া হয় পড়ুয়াদের বিক্ষোভ মঞ্চ। অচলাবস্থা কাটে বিশ্বভারতীতে। পড়ুয়াদের বহিষ্কার প্রসঙ্গে বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বলেন, ‘লঘু পাপে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বহিষ্কৃত ৩ পড়ুয়া ক্লাসে যোগ দিতে পারবেন। ছাত্রদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখুন। ওদের পড়তে দিন।’


বিশ্বভারতীর উপাচার্যের ভূমিকাতেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘উপাচার্য নিজেকে আইনের থেকে বড় ভাবলে তাঁকে শিক্ষা দেবে আদালত।’


পাশাপাশি হাইকোর্ট এই নির্দেশও দেয়, অবিলম্বে বিশ্বভারতীর স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে হবে। প্রত্যাহার করতে হবে সমস্ত অবস্থান-বিক্ষোভ। উপাচার্যকে বিরূপ মন্তব্য না করারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।


আদালতের নির্দেশের পর অনশন প্রত্যাহার করেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা। শুরু হয় আবির খেলা। কিন্তু এবার পড়ুয়াদের আন্দোলনে সামিল হওয়ায় সাসপেন্ড হওয়া অধ্যাপককে ফের শোকজ করা নিয়ে ফের জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।