উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, অমিত জানা, পশ্চিম মেদিনীপুর : মহাভারতের অন্যতম চরিত্র দ্রৌপদী। পাণ্ডব আর কৌরবদের মহাকাব্যিক সংঘাতে। সেই চরিত্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহুয়া মৈত্রর 'ক্যাশ ফর কোয়েশ্চেন' (Mahua Moitra Cash For Questions Controversy) বিতর্কের মহাভারতেও চলে এসেছে দ্রৌপদীর প্রসঙ্গ ! আর তা নিয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।


মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'শশী পাঁজা বলছেন, যে মেম্বাররা বসে রয়েছেন এথিক্স কমিটিতে, তাঁরা হচ্ছেন দুর্যোধন আর যিনি চেয়ারম্যান, তিনি হচ্ছেন ধৃতরাষ্ট্র। আর যাঁর (মহুয়া মৈত্র) বিরুদ্ধে কমপ্লেন, তিনি কী ? নিজেকে দ্রৌপদী ভাবছেন ? নাকি বৃহন্নলা ভাবছেন ?' 


এক শিল্পপতির কাছে ঘুষ নিয়ে, সংসদে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার অভিযোগে শুক্রবার সংসদের এথিক্স কমিটির (Ethics Committee) মুখোমুখি হন মহুয়া মৈত্র। কিন্তু, এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান ও বিজেপি সাংসদ বিনোদ সোনকরের বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রশ্নের অভিযোগ তুলে শুনানি থেকে ওয়াকআউট করেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর সঙ্গেই বেরিয়ে আসেন বিএসপির দানিশ আলি, কংগ্রেসের উত্তমকুমার রেড্ডি-সহ এথিক্স কমিটির সদস্য, বিরোধী দলের ৫ সাংসদ। তখনই উঠে আসে মহাভারতে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের প্রসঙ্গ।


মহুয়া মৈত্র এদিন সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডলে লেখেন, সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করছে বিজেপি ! পূর্ব নির্ধারিত চিত্রনাট্য অনুযায়ী 'এথিক্স' কমিটির চেয়ারম্যান যেভাবে অসুস্থ, বিকৃতিমনস্ক, নারী বিরোধী মনোভাব দেখিয়েছেন, তাতে এটাই প্রকাশ হয় যে, রাজনৈতিক স্বার্থে এরা কতটা নীচে নামতে পারে। পাল্টা বিজেপি সাংসদ ও এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকর বলেছেন, মহুয়া মৈত্রকে শুধু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রসঙ্গেই প্রশ্ন করা হয়েছে। তাঁকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, তিনি যে প্রশ্নের জবাব দিতে চাইবেন, দেবেন। যে প্রশ্নের জবাব দিতে চাইবেন না, দেবেন না। প্রয়োজনে তিনি চাইলে, পরে লিখিতভাবেও প্রশ্নের উত্তর জানাতে পারেন। কিন্তু, এই ৩টি কাজ করার বদলে, তদন্ত যাতে বাধার মুখে পড়ে, তদন্তই যাতে না হয়, সেজন্য এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করলেন তিনি। এথিক্স কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে, এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তিনি যে সমস্ত শব্দপ্রয়োগ করেছেন, তা সাংসদ হিসাবেই হোক বা মহিলা হিসাবেই হোক, মানায় না। 


এদিকে, এথিক্স কমিটির শুনানি থেকে ওয়াকআউটের পরে, এই বিষয়ে মহুয়া মৈত্রর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে,  তা নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। 


আরও পড়ুন- কথায় কথায় মমতার নাম নিয়ে টানাটানি কেন ? জ্যোতিপ্রিয়কে আক্রমণ কল্যাণের