দীপক ঘোষ, সুদীপ্ত আচার্য ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : ক্ষমতায় না থেকেও লোকসভা ভোটের ২ মাস আগে লালে-লাল বাম-ব্রিগেড! দরকার হয়নি প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর ছবি! উচ্ছ্বসিত হয়ে সোশাল মিডিয়ায় এমন পোস্ট করে বঙ্গ বিজেপির অস্বস্তি বাড়ালেন অনুপম হাজরা! তাঁর এই মন্তব্যকে ব্যক্তিগত উপলব্ধি বলেছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য! এই নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল! 


লোকসভা ভোটের দু'মাস আগে ব্রিগেড "লালে লাল"! এই উচ্ছ্বসিত পোস্ট কার? না কোনও বাম নেতা নন, বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার! ডিওয়াইএফআই-এর ব্রিগেড সমাবেশের পরে সিপিএম যখন রাজ্য-রাজনীতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে, তখন তাদের যুব সংগঠনের ডাকা সমাবেশের এই ভিড় নিয়ে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে তুললেন, গেরুয়া শিবিরের নেতা অনুপম হাজরা। দলকে রীতিমতো আত্মসমীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন বীরভূমের প্রাক্তন সাংসদ! 


নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে, ডিওয়াইএফআই-এর ব্রিগেড সমাবেশের ড্রোন শটের একটি ছবি পোস্ট করে, অনুপম হাজরা লিখেছেন, না ক্ষমতায় কেন্দ্রে, না ক্ষমতায় রাজ্যে....শেষ কবে ক্ষমতায় ছিল, তাও হয়তো অনেকে ভুলে গেছে। না ছিল প্রধানমন্ত্রীর ছবি, না ছিল মুখ্যমন্ত্রীর ছবি, তবুও দেখি প্রচারের চাকচিক্য, তাম-ঝাম ছাড়াই -  লোকসভা নির্বাচনের মাত্র দু মাস আগে ব্রিগেড 'লালে লাল'। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা বলেন, 'সিপিএম কবে লাস্ট ক্ষমতায় ছিল, আমরা ভুলে গেছি। না কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে, না রাজ্যে ক্ষমতায় আছে। তা সত্বেও যেভাবে মানুষ  ব্রিগেডে জমায়েত হয়েছিল, সেটা অবাক করার মতো। মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী কারও ছবি ছিল না।' 


২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের বিজেপি যখন একের পর এক ভিনরাজ্যের নেতা, মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে এসে প্রচারে ঝড় তুলেছিল, তার পাল্টা বাংলা তার ঘরের মেয়েকেই চায় - এই ন্যারেটিভ সামনে রেখে সুফল ঘরে তুলেছিল তৃণমূল। কার্যত সে কথাই মনে করিয়েই, বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়া অনুপম হাজরা লিখেছেন,'আমাদের চারদিকে ভূত কমিটির ঘনঘটা। মনে রাখতে হবে, বাঙালি খুব সংবেদনশীল জাতি। আত্মতুষ্টিতে না ভুগে, বাংলার মানুষের মন পড়তে পারাটা খুব দরকার।' অনুপম হাজরা বলেন,'কিছু বছর আগে সিপিএমকে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখতাম না! এই যে জমায়েত সিপিএমের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। ব্রিগেডের সমাবেশে এত মানুষের আশা, ক্ষতিটা কার করবে, আমাদের না তৃণমূলের? '


আরও পড়ুন, হামলার পর ৪ দিন, এখনও বেপাত্তা শেখ শাহজাহান


রাজ্য বিজেপি  মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'ওনার উপলব্ধি, উনি বিজেপিকে কীভাবে দেখছেন, তাঁর মতামত, আমার বক্তব্য নেই। সিপিএমের ব্রিগেড দ্বিচারী ব্রিগেড। মানুষকে বার্তা দিতে পারেনি। সেলিম, মমতা-অধীরের সঙ্গে কী কথা বলল বলছেন, কিন্তু, আর কোনও বার্তা দিতে পারেননি। ' রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের মতে, সমাবেশে ভিড় হওয়া এক জিনিস আর সেই ভিড়কে বুথ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া আরেক জিনিস। শেষ কথা বলবে সংগঠনই। সেখানে কে কাকে টেক্কা দেয়, তার উত্তর দেবে সময়।