অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: 'খেলতে চাইলে আমরাও খেলতে পারি। রাগবি হলে রাগবি, কুস্তি হলে কুস্তি', বিজেপির অনুপম হাজরা (BJP Leader Anupam Hazra) যখন একদিকে লোকসভায় তৃণমূলকে দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন, তখন এদিন ফের সুর চড়ালেন কলকাতার তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু (TMC Councilor Asim Basu)। এটাই কি প্রশাসনের অবস্থা? শনিবারের ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ সিপিএমের।
সার্বিক ছবি...
বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা গত কাল, রবিবারই বলেছিলেন, 'লোকসভায় আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে...তৃণমূল যে গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে, ঠিক সেই ভাষাতেই যদি আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে জবাব দিই, তাহলে কেমন হয়।' এদিন কলকাতা পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর অসীম বসুর মুখে আবার শোনা গেল, 'খেলতে চাইলে আমরাও খেলতে পারি। রাগবি হলে রাগবি, কুস্তি হলে কুস্তি।' একনজরে মনে হবে, যেন অসহিষ্ণুতার প্রতিযোগিতা। একদিকে যখন কলকাতা পুরসভায় বিরোধী দলের কাউন্সিলরের গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে, তখন অন্যদিকে কার্যতে লোকসভায় দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। কলকাতা পুরসভায় তৃণমূল ও বিজেপি কাউন্সলের মধ্যে ধস্তাধস্তির পর, এখনও এভাবে একে অন্যকে হুঁশিয়ারি দেওয়া চলছে!! দেখে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, 'এটা কী হচ্ছে? এই হচ্ছে প্রশাসনের অবস্থা।' একটা সময় যে কলকাতা পুরসভার মেয়রের চেয়ারে বসেছেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, গত শনিবার সেই কলকাতা পুরসভায় দেখা যায় এক লজ্জার ছবি!!! তুমুল হইহট্টগোল। তার মধ্যেই বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে 'ধাক্কা' মারেন তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। যা দেখে অনেকে বলছেন, 'পুরসভা নয় তো, এ যেন একেবারে কুস্তির আখড়া।' দু'জনকেই শোকজ করেছেন কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। কিন্তু, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির কুস্তি শনিবারেই থেমে যায়নি। বরং, তরজার পারদ আরও চড়িয়ে দিয়েছে অনুপম হাজরার হুঁশিয়ারি!!! বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, 'সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে, পুরসভার অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি জনপ্রতিনিধিদের যদি মারধর অবধি হতে পারে, তাহলে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা মাথায় রেখে আগামী লোকসভা অধিবেশন চলাকালীন তৃণমূলীদের প্রতি ঠিক একই প্রথা প্রয়োগ করলে মন্দ কি?'
কলকাতার মেয়র ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম রবিবারই বলেছিলেন, 'দেখুন লোকসভায় গঠনমূলক সমালোচনা করি, তা ছাড়া কিছু করি না।' এদিন আবার অনুপম হাজরা হুঁশিয়ারি দিলেও, আবার উল্টো সুর শোনা গেছে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মুখে। তাঁর কথায়, 'এটা বিজেপির সংস্কৃতি নয়। আমাকে কেউ কামড়ে দিলে আমি পাল্টা কামড়ে দেবো নাকি?
লোকসভায় আমাদের অনেকে রয়েছেন, কখনই এরকম ঘটনা ঘটেনি।... যিনি বলেছেন তার ব্যাখ্যা নেওয়া উচিত।' সব মিলিয়ে শনিবারের ঘটনা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেলেও তৃণমূল-বিজেপির নেতাদের একাংশ যেন ভাঙলেও মচকাতে নারাজ।
আরও পড়ুন:সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে বৃক্ষরোপণ শ্যামলের, এরপর লক্ষ্য নেপাল-ভুটান