কলকাতা: বার বার বিতর্কিত মন্তব্য। দলের থেকেও বিদ্রোহের সুর গলায়। সেই নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছিল আগেই। নিরাপত্তা ছেঁটে বার্তাও দেওয়া হয়েছিল কড়া। তার পরই অমিত শাহের সফর চলাকালীন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদকের পদ খোয়ালেন অনুপম হাজরা। সেই নিয়ে কাটাছেঁড়ার মধ্যে ফের মুখ খুললেন তিনি। জানালেন, পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার তিন ঘণ্টার মাথায় ফের বিজেপি থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে তাঁকে। কিছু শর্ত মেনে চললে, সব আগের মতো হয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছে। (Anupam Hazra)


তাহলে কি বিজেপি-র শর্ত মানবেন অনুপম? জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, আপাতত দু'দিনের জন্য হিমালয়ে যাচ্ছেন তিনি। যা বলার, ফিরে এসে বলবেন। বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অনুপম বলেন, "আমি দু'দিনের জন্য হিমালয়ে যাচ্ছি। ফিরে আসি, তৃতীয় দিন কথা হবে।" জানতে চাওয়া হয়, তিনি কি তৃণমূলে ফেরার কথা ভাবছেন? জবাবেও একই কথা শোনা যায় অনুপমের মুখে। হিমালয় থেকে ফিরেই যা বলার বলবেন বলে জানিয়েছেন। (West Bengal BJP)


বেশ কিছু দিন ধরেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে সরব অনুপম। একাধিক বার দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগও জমা পড়ে। তাতে অতি সম্প্রতিই তাঁর নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। তার পর মঙ্গলবার বঙ্গসফরে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং- বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তার পর সন্ধেয় অনুপমকে জাতীয় সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 


আরও পড়ুন: Anupam Hazra : বিজেপিতে পদ খুইয়ে কোন পথে? সোশ্যাল মিডিয়ায় ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট অনুপমের


বিজেপি-তে পদ খোয়ানোর পর অনুপমের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। আর সেই জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছেন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ। তাঁর বক্তব্য, "অনুপম আমাদের রবীন্দ্র সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত। অনুপম বিশ্বভারতী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছেন। শিক্ষিত ছেলে, ভাল ছেলে, অধ্যাপক ছিলেন।  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিশ্বভারতীতে প্রতিবাদ কর্মসূচি করেছিলেন, সেখানেও এসেছিলেন অনুপম। অর্থাৎ প্রতিবাদ করতে জানেন উনি। বিজেপি-র মধ্যে চোরচাট্টা, দাগাবাজ, ধান্দাবাজ নেতারা রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন উনি। বিজেপি-তে ভাল লোক আছে বলে আমাদের মনে হয় না। যে কারণে বাংলায় জায়গা করতে পারেনি বিজেপি, আগামী দিনেও পারবে না।"


অনুপমের প্রশংসায় কাজল আরও বলেন, "আবারও বলব, অনুপম ভাল ছেলে। প্রতিবাদ করছেন উনি। ভারতে যে জাতিভিত্তিক রাজনীতি চলছে, তার বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু-মুসলিম-শিখ-ইসাই, আমরা সবাই ভাই-ভাইয়ের নীতি নিয়ে চলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুপম হয়ত সেটাকে কিছুটা মান্যতা দিচ্ছেন। বিজেপি-তে যে বাক স্বাধীনতা নেই, এতেই প্রমাণ হচ্ছে।"


এই গোটা বিতর্কে সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটর সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "অনুপম হাজরা যে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সম্পাদক ছিলেন, এটা কেউ জানত না, মানত না। এখন বোঝা গেল পদে ছিলেন। তবে অনুপম হাজরার অসুবিধা ছিলেন। তৃণমূলের সাংসদ ছিলেন। বিজেপি-র হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে মাছভাতও খেয়ে আসেন। এঁদের এমনই চলে"