কলকাতা: নয়ডায় গ্রেফতারির পর রাতেই আনা হয় কলকাতায়। তার পর সকালেই আদালতে পেশ। আদালতে নিজেই নিজের হয়ে সওয়াল করলেন বিজেপি নেতা তথা আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari)। সেখানে আপনা থেকেই নিজের জন্য় দু'দিনের পুলিশি হেফাজত চান তিনি। পুলিশ আবার ১৪ দিনের হেফাজত চেয়ে আবেদন জানায়। শেষ মেশ দুই পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর আট দিনের জন্য জিতেন্দ্রকে পুলিশি হেফাজতে পাঠায় পুলিশ। আগাীম কাল সুপ্রিম কোর্টে শুনানি রয়েছে। তাই জামিনের আবেদন জানাননি জিতেন্দ্র (Asansol News)।


কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্য়ুর ঘটনায় গ্রেফতার জিতেন্দ্র


আসানসোলে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্য়ুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে জিতেন্দ্রকে। অনিচ্ছাকৃত হত্যার মামলা রয়েছে। যদিও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি জিতেন্দ্রর। এ দিন সংবাদমাধ্যমে জিতেন্দ্র বলেন, "২০২৪-এ এর জবাব দেবেন আসানসোলবাসী। অপেক্ষা করুন। শেষ কথা তৃণমূল বা পুলিশ বলবে না। আসানসোলের মানুষ শেষ কথা বলবেন। বদলা নেওয়ার ইচ্ছে, কিন্তু এ সব করে আমাদের দমানো যাবে না। আসানসোলে খুন হল, কেউ গ্রেফতার হল না। একটা দুর্ঘটনায় কয়েক জন মারা গেল, দুঃখজনক ঘটনা বটে, কিন্তু তার জন্য গ্রেফতার করা হল আমাকে।"


আরও পড়ুন: Recruitment Scam: শান্তনু-ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু ইডির


তবে জিতেন্দ্রর গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "বোকা বোকা কথা। বাংলার মানুষ কী জবাব দিয়েছেন ২০২১ সালে, তা দেখা গিয়েছেন। অন্যায় করেছেন। এটা প্রশাসনিক বিষয়। এর সঙ্গে রাজনীতির কী যোগ! চূড়ান্ত অব্যবস্থায় কিছু লোককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে, আহত করে, উদ্ধারে ফিরে এলেন না কেন? ওঁরা তো ওখানেই ছিলেন! অন্য জায়গায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। ফিরে এলেন না কেন? দায়িত্বজ্ঞাবহীনের মতো পালিয়ে গেলেন! গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত সঠিক। একই মামলায় শুভেন্দু অধিকারীকেও গ্রেফতার করা উচিত।"


গতবছরের ১৪ ডিসেম্বর, আসানসোল পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী, জিতেন্দ্র-পত্নী চৈতালি তিওয়ারির ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে কম্বল বিলি অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে এক নাবালিকা-সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ একঝাঁক বিজেপি নেতা। সেই মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টেও। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি, জিতেন্দ্র, চৈতালি-সহ পাঁচ জনের আগাম জামিনের আর্জি খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এর পরই গতকাল উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় যমুনা এক্সপ্রেস থেকে জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। সুপ্রিম কোর্টে এখনও শুনানি বাকি।


অনিচ্ছাকৃত খুন ও খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ


সেই ঘটনায় পুলিশের এফআইআর-এ জিতেন্দ্র, তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি-সহ একাধিক নাম ছিল। অনিচ্ছাকৃত খুন ও খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। নিহতদের আসানসোলের কাল্লার বাসিন্দা চাঁদমণি দেবী, ঝালি বাউড়ি এবং রামকৃষ্ণডাঙার ১২ বছরের প্রীতি সিংহ হিসেবে শনাক্ত করা যায়। সেই ঘটনায় গ্রেফতারও করা হয় কয়েক জনকে।