কলকাতা: নয় নয় করে আট দিন পার। এখনও খোঁজ নেই সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan)। সেই নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন অব্যাহত। সেই আবহেই বিস্ফোরক দাবি করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তাঁর দাবি, শেখ শাহজাহানকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের সাহায্য নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমার চলে গিয়েছেন শাহজাহান। তাঁর এই দাবি ঘিরে তরজা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। (Shantanu Thakur)
সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে ঢুকতে গিয়েই আক্রান্ত হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তার পর আট দিন কেটে গেলেও এখনও খোঁজ মেলেনি শাহজাহানের। সেই নিয়েই এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন শান্তনু। তাঁর বক্তব্য, "মায়ানমার-বাংলাদেশ পালিয়ে গেলে তো শাহজাহানকে খুঁজে পাওয়ার কথা নয়। সে তো রোহিঙ্গা গোছাতে গিয়েছে, যাতে যে তুলকালাম হয়েছে, তার চেয়ে দ্বিগুণ বেশি তুলকালাম করা যায়। তাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দেশ বিরোধী সরকার...আমার মনে হয় একসব দেশবিরোধী কাজকর্ম। ওর বৃহত্তর সাজা হবে। সময় এলেই বুঝতে পারবে ও।" (Sandeshkhali Incident)
আট দিন পার, কোথায় শাহজাহান, রাজ্য রাজনীতিতে এই প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে। হন্যে হয়ে খুঁজলেও, এখনও পর্যন্ত শাহজাহানের খোঁজ নেই। এ নিয়ে পুলিশের ভূমিকাতেও প্রশ্ন তুলেছেন শাহজাহান। তাঁর বক্তব্য, "পুলিশ খোঁজ পাবে কী করে? খুঁজলে তবে তো মিলবে? পুলিশই ওকে আশ্রয় দিয়ে দেশের বাইরে বের করে দিয়েছে।" এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "উনি জানেন মায়ানমার গিয়েছে? উনি জানতেই পারেন। আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাহারা দেওয়ার কথা তো কেন্দ্রের! উনি জানতেই পারেন। এমন কিছু ঘটলে সামনে আনছেন না কেন? বিজয় মাল্য, নীরব মোদিরাও পালিয়েছেন বিজেপি-র সাহায্য। ওরা বিদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য় করতে পারে। শান্তনুকে পালাতে সাহায্য করেছেন কি না, ওঁকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত।"
আরও পড়ুন: North 24 Pargana: সম্পর্কে দীর্ঘ টানাপোড়েনের জের, মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে এসে স্ত্রী-কে কুপিয়ে খুন
শাহজাহানের খোঁজ না মেলায় এদিন রাজ্য সরকারকে একহাত নেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরও। কলকাতায় পা রেখে তিনি বলেন, "কার আশ্রয়ে রয়েছেন দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা? এটাই প্রথম নয়, পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে, তাঁকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নামেন। দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাকে গ্রেফতারের পরিবর্তে, তাঁকে বাঁচাতে চাইছে বাংলার সরকার। পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। দুর্নীতি চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে, ইডি-র উপরেও আক্রমণ হচ্ছে।"
শাহজাহান-কাণ্ডে রাজ্যের সরকারের দিকেও আঙুল তোলেন অনুরাগ। সরাসরি নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তাঁর বক্তব্য, "জনগণের অর্থের হিসেব চাইলে, দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচাতে কেন চাইছে বাংলার সরকার? মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের উপর থেকে কি মুখ্যমন্ত্রীর রাশ আলগা হচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রী কি নিজেই লুঠের অনুমোদন দিয়ে রেখেছেন, নাকি তাঁর কথা কেউ শুনছেন না? দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলে তাঁর গুন্ডারা ঝাঁপিয়ে পড়ে, দেশে আর কোথাও যা দেখা যায় না।"