উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : রাজনৈতিক সংঘাতের আবহেই গতকাল সাক্ষাৎ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজভবন থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রোটোকল মেনে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরেছেন। জানিয়েছেন রাজ্যের দাবিদাওয়া। যদিও এনিয়ে সেটিং-তত্ত্বে শান দিয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। তবে, আজ কৃষ্ণনগরের সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠকের পর রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বললেন, "কালকের মিটিংয়ে যে কোনও লাভ হয়নি, আজকের আক্রমণে নিশ্চয়ই তা বোঝা গেছে। কোনও রাজনৈতিক কথা প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর হয়নি।"


নরেন্দ্র মোদি দলীয় মঞ্চ থেকে তৃণমূল ও তৃণমূল নেত্রীকে ঝোড়ো আক্রমণ করলেন! আর মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় আক্রমণের জবাব তুলে রাখলেন রাজনৈতিক সভার জন্য়! আর এই সংঘাতের আবহেই আবার সন্ধেয় রাজভবনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রায় ২০ মিনিট দু'জনের কথা হয়।


বৈঠক শেষে বেরিয়ে মমতা বলেন, 'এখন তো ইলেকশন ডিক্লেয়ার হয়নি। সুতরাং এটা প্রোটোকল আছে যে, রাষ্ট্রপতি বা প্রাইম মিনিস্টার আসলে, আমাদের দেখা করতে হয়। আমি যেহেতু RCTC-তে যেতে পারিনি, তাই এখানে টাইম পেয়েছিলাম, তাই এখানে দেখা করে গেলাম, রাজ্যের কথাগুলোও বলে গেলাম। আর কিছুক্ষণ গল্প করলাম এই যা। মানে আমার সঙ্গে রাজনীতির কথা কম হয়, গল্প বেশি হয়।'


এনিয়ে সুর চড়ায় কংগ্রেস ও সিপিএম। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'তাহলে কি বাংলার দিদি, দিল্লির মোদিকে কিছু উপহার দিলেন ? যাতে মোদি খুশি হতে পারেন ? তারপরে কি দিদি রাজভবন অভিযানে গেলেন? মোদিকে ম্যানেজ করতে ? এটা কি কাকতালীয়, মোদি আসছেন, শেখ শাহজাহান জেলে যাচ্ছেন ? কীসের কারণে দিদিকে রাজভবনে গিয়ে মোদির সঙ্গে দেখা করতে হয়? কীসের ভয় তাঁর ? কীসের ভয়? কেন ভয় ? কী কারণে ভয় ? কীসের তোয়াজ? জানতে চাই আমরা।'


সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'এটা সিটিং না সেটিং? বিজেপির দেশে হাল খুব খারাপ। ফলে সিট নেগোসিয়েশন...ED-CBI কিছু বলছে না, পিসি-ভাইপোকে বাঁচিয়ে দিচ্ছে। আর পিসি-ভাইপো বলছে, আমাদের বাঁচিয়ে দাও, সিটের নেগোসিয়েশন করছি।'


যদিও সেই বৈঠক প্রসঙ্গে সুকান্তর বক্তব্য, 'প্রধানমন্ত্রী জানেন, মুখ্যমন্ত্রী ভেতরে এক কথা বলেন, আর বাইরে এসে অন্য কথা বলেন। কোন সংবিধানে একজন মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন না আজকে সরকারি প্রোগ্রামে মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস আমার পাশে বসেছিলেন। এটা ডেকোরাম। তৃণমূল সংবিধান মানে না। আমরা তৃণমূল হতে পারি না। চোরকে রাজধর্ম শেখাতে হবে।  '