হলদিয়া: বিধানসভা নির্বাচন থেকে পঞ্চায়েত, পৌরসভা, লোকসভা এবং সর্বোপরি উপনির্বাচন, প্রত্যেক বারই পশ্চিমবঙ্গে হারতে হয়েছে বিজেপি-কে। সেই নিয়ে দলের অন্দরে দায় ঠেলাঠেলি থেকে কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরও দোষ চাপানো হয়েছে। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবার বিজেপিকে জয়যুক্ত করার ফর্মুলা বেঁধে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। (Suvendu Adhikari)


হলদিয়ার দলীয় সভা থেকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বার্তা দেন শুভেন্দু। সেখানে তিনি বলেন, "রাজ্যে দু'টো কাজ করতে হবে। ভোটের আগে মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধর, নিজেরে করো জয়। ভয় কাটাতে হবে।" এই ভয় কাটানোর উপায়ও বাতলে দেন শুভেন্দু। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বলেন, "উপদ্রুত এলাকা ঘোষণা করতে হবে, কাড়তে হবে পুলিশের ক্ষমতা। আর কী করতে হবে? হাত-পা বেঁধে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাবেন না কমিশন। এসওপি বদলে দিন।" (West Bengal Assembly Elections 2026)


শুভেন্দুর এই মন্তব্যে তীব্র কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেন। তাঁর কথায়, "কেন্দ্রীয় বাহিনী, কমিশনকে কাজে লাগিয়ে, মিথ্যে প্রচার করে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে এবং অবশ্যই বাংলায় সিপিএম এবং কংগ্রেসের সহযোগিতায় কোনও রকমে ১২টি আসন জিতেছেন। নিলে দু'টি আসনও পেতেন কি না সন্দেহ আছে। এর পরও '২৬-এ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার হতে হতে বিজেপি-র কঙ্কালসার চেহারাটা যেভাবে সামনে চলে আসছে, তাতে ভোটে জয় তো ছেড়ে দিন, দলটাকে অন্তত টিকিয়ে রাখুন, যাতে চতুর্থবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার লড়াইয়ে নেমে আপনাদের বিরোধী হিসেবে পেতে পারি।"


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: 'হিন্দু ভোট বাড়লেই '২৬-এ মমতা প্রাক্তন, ভাইপো জেলে', সুকান্তর কড়া বার্তার পরও অনড় শুভেন্দু


২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু। সেবার রাজ্যে ২০০ আসন পারের লক্ষ্য় রেখেছিলেন নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ। কিন্তু ফল বেরোলে দেখা যায় ১০০-র ধারেকাছেও পৌঁছয়নি বিজেপি। এর পর পঞ্চায়েত, পৌরসভা নির্বাচনেও পরাজিত হয় গেরুয়া শিবির। এবছর লোকসভা নির্বাচনে ৩৫ আসনের লক্ষ্যমাত্রা রাখলেও, ১২টিতেই থেমে যেতে হয়েছে তাদের। বিধানসভা উপনির্বাচনেও চারটি আসনেই পরাজিত হয়েছে বিজেপি। 


কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর পরও বিজেপি-র এই ভরাডুবি নিয়ে দলের অন্দরেও কাটাছেঁড়া চলছে। আর তাতেই অন্তর্দ্বন্দ্ব, মতানৈক্য প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে। দিলীপ ঘোষের মতো নেতা সরাসরি রাজ্য নেতৃত্বকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। সেই আহহেই ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। আর সেই প্রসঙ্গেই হলদিয়া থেকে পুলিশের ক্ষমতা খর্ব করা থেকে হাত-পা না বেঁধে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর দাবি জানালেন।