তুহিন অধিকারী, বিষ্ণুপুর: দলবদল নিয়ে আবারও জোর জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে। সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan) বিজেপি (BJP) ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলেও (TMC) তিনি ফেরার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে সাড়া না পেয়ে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছেন বলে খবর। আর সেই জল্পনা উস্কে দিল একটি রক্তদান কর্মসূচি, যেখানে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে একমঞ্চে দেখা গিয়েছে সৌমিত্রকে।


গাঁধীবাদী কংগ্রেস নেতা, প্রয়াত তড়িৎকুমার কোলের স্মৃতিতে সিহর অঞ্চল কংগ্রেস কমিটির তরফে সম্প্রতি একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়েছিল। একই সঙ্গে প্রয়াত তড়িৎকুমারের স্মরণসভারও আয়োজন হয়। সেখানেই সৌমিত্রর উপস্থিতি নজর কাড়ে। 'স্বর্গীয় তড়িৎকুমার কোলে মহাশয়ের স্মরণ সভা ও রক্তদান কর্মসূচি' লেখা ব্যানারের  নীচে বসেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সম্পাদক দেবু চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্য কংগ্রেস নেতারা। তাঁদের পাশেই দেখা যায় সৌমিত্রকে। 


আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস নেতাদের পাশে সৌমিত্রের উপস্থিতি নিয়েই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তাহলে কি কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ, প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে ওই ছবি। সৌমিত্র যদিও দলবদলের সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।


আরও পড়ুন: Calcutta High Court: অবিলম্বে মেডিক্যাল কমিশন গঠন করে নজরদারি হোক, ডেঙ্গি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ চিকিৎসক


এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "গত পাঁচ বছরে সাংসদকে চোখের দেখাও দেখতে পাননি এলাকার মানুষজন। বিজেপি থেকে হয়ত আর টিকিট পাবেন না। যে কারণে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল সকলকে গ্রহণ করে না। তাই তিনি হয়ত আবার পুরনো দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেছেন।"


দিব্যেন্দু আরও বলেন, "কংগ্রেস তো ওঁর পুরনো দল। ওই দল থেকেই রাজনীতিতে পথ চলা শুরু সৌমিত্রের। উনি পুরনো দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। উনি ভাবছেন, বিজেপি থেকে না পেলেও, পুরনো দলের কাছ থেকে আবার টিকিট পেতে পারেন।"


যদিও প্রদেশ কংগ্রেসসহ-সভাপতি দেবু বলেন, "কোনও যোগদানের বিষয় নয়। প্রবীণ গাঁধীবাদী নেতা তড়িৎকুমারের স্মরণসভা ছিল। সেখানে সাংসদ হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সৌমিত্রকে। যদিও ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি কংগ্রেসের প্রতীকেই লড়াই করেছিলেন কোতুলপুর থেকে। আর যদি কেউ কংগ্রেসে যোগদান করতে চান, তাঁর জন্য সবসময় দরজা খোলা রয়েছে। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলে ক্ষতি কী!"


সৌমিত্র নিজে যদিও জল্পনা খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁৎ বক্তব্য, "এলাকার বর্ষীয়ান নেতা তড়িৎকুমার কোলের স্মরণসভা ছিস। রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়। অন্য রাজনীতিকরাও ছিলেন সেখানে। আমি তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলাম। এটা কোনও অন্যায় কাজ নয়।" তৃণমূলের অভিযোগের পাল্টা সৌমিত্র বলেন, "তৃণমূলের চিন্তাশক্তি লোপ পেয়েছে, তাই এই ধরনের কথা বলছে। তৃণমূলের কেউ মারা গেলে, সেখানেও ফুল দিতে যাব আমি।" কিন্তু তাতেও জল্পনা থামছে না।