কলকাতা : "দিদি ভারতে কী করছেন ? ওঁর পাকিস্তানে গিয়ে আসিম মুনিরকে সাহায্য করা উচিত। ভারতীয় সেনা যদি দিদিকে দেখে দৌড়ায়, তাহলে ওঁর প্রয়োজন এখানে নেই, ওঁকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। দিদির অপব্যবহার হচ্ছে।" ঠিক এই ভাষাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তুলোধনা করলেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সেনা এদিন মেয়ো রোডে তৃণমূলের অস্থায়ী প্রতিবাদ মঞ্চ খুলে দেওয়ায় সরব হন তৃণমূলনেত্রী। তিনি সুর চড়িয়ে বলেন, "আমি যখন আসছিলাম, তখন প্রায় ২০০-র মতো সেনা আমাকে দেখে ছুটে পালাচ্ছিল। আমি বললাম, আপনারা পালাচ্ছেন কেন ? আপনারা আমার বন্ধু। আমরা আপনাদের নিয়ে গর্বিত। এটা আপনাদের দোষ নয়। আপনারা বিজেপির কথায় করেছেন। দিল্লির কথায় করেছেন। দিল্লির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায় করেছেন।"

ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থার অভিযোগে 'তৃণমূলের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ' খোলা ঘিরে সোমবার দুপুরে তুলকালাম বাঁধে। মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের মঞ্চ খুলতে নামে সেনাবাহিনী। প্রতিবাদে পৌঁছে যান খোদ তৃণমূল নেত্রী। সেখানে গিয়ে তিনি বলেন, "আমাদের মাইকের কানেকশন কেটে দিয়েছে। স্টেজ ভেঙে দিয়েছে। প্যান্ডেল আর্মিকে দিয়ে খুলিয়েছে। আমার আর্মির বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। তার কারণ, উই আর প্রাউড অফ আওয়ার আর্মি। কিন্তু, আর্মিকে যখন বিজেপির কথায় চলতে হয় তখন দেশটা কোথায় যায়, সেটা নিয়ে সন্দেহ জাগে।"  

 

 তাঁর এই মন্তব্যের পাল্টা সুকান্ত বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওখানে গিয়ে যে হাঙ্গামা করেছে তাতে স্পষ্ট যে, উনি এটা পরিকল্পনামাফিক করেছে। কোনও মঞ্চ খোলার জন্য কোনও মুখ্যমন্ত্রী গিয়ে হাঙ্গামা করছেন এটা ভারতের কোথাও দেখা যায়নি। ১৮০৪ জনের যে তালিকা বেরিয়েছে, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকে ভর্তি। চাকরি বিক্রি করা হয়েছে। সেখান থেকে নজর ঘোরাতেই, আপনাদের ক্যামেরা ঘোরানোর জন্য এত বড় নাটক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর কিছু নয়। সেনা মঞ্চ খুলছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী ? আগামী দুই-তিনদিন এরকম অনেক কাজ তৃণমূল কংগ্রেস করবে। তৃণমূলের অন্দরে দুই বিধায়ক লড়াই করবেন, দুই সাংসদ-বিধায়ক লড়বেন, যাতে মিডিয়ার মনোযোগ সেদিকে চলে যায়।" তাঁর সংযোজন, "আপনি দুই দিনের অনুমতি নিয়েছিলেন। কোনও অনুমতি ছাড়াই লাগাতার মঞ্চ চলছিল। বিজেপিও ওখানে কিছু করতে চাইলে বিজেপিকেও অনুমতি নিতে হবে। সবাইকে অনুমতি নিতে হয়। আপনাকে সরাতে বলা হয়েছিল। আপনি সরাননি। তাই সেনা হাত লাগিয়েছে। সেনার সমালোচনা করবেন না। সেনার পিছনে লাগবেন না। এমন কাজ করা, পাকিস্তানের কোনও প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে শোভা দেয়।"