নন্দীগ্রাম : নন্দীগ্রামের হরিপুরে সরকারি আধিকারিককে হেনস্থার ঘটনায় শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টা নন্দীগ্রাম বন‍ধের ডাক বিজেপির। বন‍্‍ধে মিশ্র সাড়া। সকাল থেকে দোকানপাট বন্ধ। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম। অন্যদিকে, নন্দীগ্রাম-চণ্ডীপুর রাজ্য সড়কে রতনপুরের কাছে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়। টেঙ্গুয়াতে বিজেপি কর্মী, সমর্থকরা পিকেটিং শুরু করেন। 


কৃষি পণ্য বিলিতে বৈষম্যের অভিযোগে গতকাল নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের কৃষি সম্প্রসারণ আধিকারিক বিদ্যুৎবরণ মণ্ডলকে হেনস্থা ও নিগ্রহ করা হয়। টানাটানিতে ছিঁড়ে যায় জামার ওপরের বোতাম। কিন্তু তাও বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে নিস্তার পাননি নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক কৃষি সম্প্রসারণ আধিকারিক। প্রথমে বগলদাবা করে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর শুরু হয় টানাহেঁচড়া। গ্রামের মহিলারাও বাদ যাননি । ঘিরে ধরে বিক্ষোভের মধ্যে হাতও চালান কয়েকজন। তারপর কয়েকশো ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর মধ্যে এভাবেই টানতে টানতে ঢুকিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি অফিসে।


কৃষিপণ্য বিলিতে বৈষম্য ও স্বজনপোষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে শুক্রবার এভাবেই হেনস্থা করা হয় নন্দীগ্রাম এক নম্বর ব্লকের কৃষি সম্প্রসারণ আধিকারিককে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোর।


নন্দীগ্রামের কৃষকবাজারে রাজ্য কৃষি দফতরের অফিস রয়েছে। গতকাল সেখানে হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ডেপুটশন ছিল। তাঁদের অভিযোগ, বীজ থেকে শুরু করে কৃষিকাজ সম্পর্কিত বিভিন্ন পণ্য বিলিতে স্বজনপোষণ করা হচ্ছে। 


এরই প্রতিবাদে গতকাল রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ও নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ, মেঘনাদ পালের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কৃষি দফতরের অফিসের সামনে পৌঁছতেই, কৃষি সম্প্রসারণ আধিকারিক পালিয়ে যাচ্ছিলেন। তখনই তাঁকে তাড়া করা হয়। তারপর চলে হেনস্থা।


এর জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন এই আধিকারিক। যদিও এক বিক্ষোভকারী বলেন, কোনও হেনস্থা করা হয়নি! উনি পালিয়ে যাচ্ছিলেন।


আক্রান্তের দাবি অবশ্য ভিন্ন। বলেন, বাড়িতে চশমা ফেলে এসেছিলাম। সেটা আনতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওরা মনে করছে পালিয়ে যাচ্ছি। সেইজন্য আমাকে তেড়ে এসে মারধর করে।


এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনীতিও। শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল বলেন, এই অঞ্চল সবদিক থেকে বঞ্চিত। তাই ডেপুটেশন দিতে এসেছিল। আমরা আগে থেকেই সময় চেয়েছিলাম।
 
যদিও নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাস অধিকারী বলেন, এই সরকারের আমলে সব কৃষকের সব সরঞ্জাম দেওয়া হয়। আজ যারা বিক্ষোভের নামে এসেছিল, তারা বিজেপির গুন্ডা। গণ্ডগোল করতে এসেছিল। সরকারি আধিকারিককে মারধর করেছে।


খবর পেয়ে গতকাল ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। অন্যদিকে সহ কৃষি অধিকর্তার অফিসের বাইরে বসে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ।