আশাবুল হোসেন, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম : অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee) এবং কুন্তল ঘোষকে দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে গতকাল হাইকোর্টে মন্তব্য় করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। তা নিয়েই বীরভূমের সিউড়ির সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mazumdar)। এই ইস্যুতে পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূলও (TMC)।
অভিষেককে নিশানা সুকান্ত-র
বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে রাজনৈতিক বাগযুদ্ধ চরমে। এই সংক্রান্ত একটি মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠে এসেছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে। আর সেই বিষয়টি নিয়েই সিউড়ির সভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'গতকাল কোর্ট বলেছে, প্রয়োজনে অভিষেককে জেরা করতে হবে। তৃণমূল নেতাদের বলি, খোকন খোকন ডাক ছাড়ি, খোকন গেছে কার বাড়ি। আয় রে খোকন ঘরে আয়, ডাকছে তোকে সিবিআই। খোকনের ডাক পড়ার সময় এসে গেছে'।
সূত্রপাত কীভাবে ?
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি ও যুব তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) দাবি করেন, কেন্দ্রীয় এজেন্সি তাঁকে চাপ দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর চেষ্টা করছে। নিম্ন আদালত এবং পুলিশের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ জানান তিনি। সেই মামলায় বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, গত ২৯ মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় একটি সভায় যে বক্তব্য রেখেছিলেন তার সঙ্গে কুন্তল ঘোষের বয়ানের সাযুজ্য আছে। কুন্তল ঘোষ সেখান থেকেই এই অভিযোগের বয়ান লেখার সূত্রে পেয়েছিলেন কি না তার জন্য তদন্ত করা প্রয়োজন। বিচারপতির লিখিত নির্দেশনামাতেও সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লেখা হয়, প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বক্তৃতাও সিবিআই তদন্ত এবং প্রয়োজনে ইডি-র তদন্তের আওতার বাইরে থাকা উচিত নয়। আদালতের এই পর্যবেক্ষণের পরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে তেড়েফুড়ে আক্রমণ শানায় তৃণমূল।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ এবং তা নিয়ে তৃণমূলের তেড়েফুঁড়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পরদিন বিচার ব্যবস্থার এক্তিয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'প্রশাসনের পার্ট প্রশাসনের করা উচিত, আদালতের পার্ট আদালতের করা উচিত। পাওয়ার নিয়ে মানুষের কাছে বার্তা না যায়। আদালতের এমন কিছু করা উচিত না কারোর পক্ষ নিচ্ছে এই বার্তা যাচ্ছে। হাইকোর্ট বা সুপ্রিমকোর্টের পাওয়ার রয়েছে। পাওয়ার প্রয়োগ করতে পারে, কিন্তু মানুষের কাছে বার্তা না যায়। উনি বলতে পারেন অমুককে ডেকে পাঠানো উচিত। কালকে হয়তো বলবে স্পিকারকে ডেকে পাঠানো উচিত, কিন্তু তা বাঞ্ছনীয় না। উপলব্ধি করতে হবে, আদালতের এমন কিছু করা উচিত না কারোর পক্ষ নিচ্ছে এই বার্তা যায়'। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তারপর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার জল কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।