গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Scam) কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের একাধিক নেতা মন্ত্রী ও বিধায়ক। সোমবারই ম্য়ারাথন তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পরে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে (Jiban Krishna Saha) গ্রেফতার করেছে সিবিআই (CBI)।
এই আবহে সুর চড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) দাবি, শাসকদলের অন্তত ১০০ জন বিধায়ক চাকরি বিক্রির এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। তৃণমূল সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও, শাসক-বিধায়কদের নিশানা করে ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। সোমবার পাথরপ্রতিমার ব্রজবল্লভপুরের সভা থেকে দুর্নীতি ইস্যুতে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা ও তাঁর জামাই স্বপন প্রধানকে তীব্র আক্রমণ করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mazumdar)।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'সব থেকে বড় মহাপুরুষ, এখানকার মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। আর তার জামাই, কী নাম, স্বপন প্রধান। লুটেপুটে খাচ্ছে। স্নানের ঘাট বাঁধানোর জন্য ৫৬ কোটি টাকা এসেছিল। ৫৬টা ইটও খুঁজে পাবেন না। গিয়ে দেখবেন, ৫৬ কোটি টাকা জল দিয়ে গিলে খেলে নিয়েছে জামাই আর শ্বশুর মিলে।' পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন মন্ত্রীও। সাগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেছেন, 'পার্টিকুলারলি আমাকে নিশানা করেছে। সাহস থাকলে প্রমাণ করুক। সুকান্ত মজুমদার যে অভিযোগ করেছেন, তা পুরো মিথ্যা, ভিত্তিহীন।'
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরার জামাই স্বপন প্রধান তৃণমূল নেতা ও সাগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। রাজ্য বিজেপি সভাপতির আক্রমণের জবাব দিয়েছেন তিনিও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, 'এই জামাই আর শ্বশুর মিলে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি করেছে, আমার কাছে খবর এসেছে। আপনারা তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে, আমার কাছে জমা করুন। আমি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করব এই জামাই আর শ্বশুরের বিরুদ্ধে সিবিআই করানোর জন্য, ইডি করানোর জন্য। আমরা নাটবোল্টু টাইট দেব আর সিবিআই আসবে। আর সিবিআই দেখলে এখন নেতারা মন্ত্রীরা পাঁচিল টপকে পালাচ্ছে। ও তো সমুদ্রের মধ্যে কুমিরের সামনে ঝাঁপ দেবে। তা ছাড়া উপায় থাকবে না।' পাল্টা সাগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা বঙ্কিম হাজরার জামাই স্বপন প্রধান বলেছেন, 'অমিত শাহর ছেলে জয় শাহ ক্রিকেট খেলোয়াড় নন, জয় শাহ বিসিসিআই সচিব হয়ে বসে আছেন। কী উদ্দেশ্যে পারিবারিকতন্ত্রের রাজ কায়েম করেছে, সাংসদ হিসেবে সুকান্তবাবু যদি তার চর্চা করেন, আমরা বাধিত থাকব। যত মিথ্যাচার করবে বিজেপি, তৃণমূল তত শক্তিশালী হবে।' পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূল-বিজেপি টক্কর ততই তীব্র চেহারা নিচ্ছে।