আবীর দত্ত, অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে (Ration Distribution Scam) বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। তার চারদিনের মাথায় সল্টলেকে ইডির দফতরে গেলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriyo Mullick) দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক। আর এ দিনই মন্ত্রীর দাদার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা। 


শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) অভিযোগ, 'পাবলিক সার্ভিস কমিশনটা লুঠ করেছে তো। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দীর্ঘদিনের মেম্বার দেবপ্রিয় মল্লিক।' পাল্টা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদার খোঁচা, 'এটা কোনও খনি নয় যে লুঠ হবে, যামনটা হলদিয়ায় হয়।' রবিবার সল্টলেকের ইডি দফতরে গিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কন্যা প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। তাঁর হাতেও নথি ছিল। কিন্তু সূত্রের খবর, তদন্তকারী অফিসার না থাকায়, সেই নথি তিনি জমা দিতে পারেননি। প্রিয়দর্শিনী মল্লিক জানিয়েছেন, ওনার একটা মেডিক্যাল নথি, যেটা জমা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। গতকাল জমা দেওয়া যায়নি। আজ জমা দেওয়া হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে সোমবার সকাল ১১টার কিছু আগে নথি হাতে সিজিও কমপ্লেক্সে (CGO Complex) আসেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদা দেবপ্রিয় মল্লিক। প্রায় ঘণ্টাখানেক তিনি ইডির দফতরে ছিলেন। বেলা বারোটার কিছু আগে বেরিয়ে আসেন। যারপর তিনি জানান, কালকে একটা চিঠি জমা দেওয়ার কথা ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। কাল এদের অফিস বন্ধ ছিল। আমরা চিঠি জমা দিতে পারিনি। আজকে আমরা এসেছি। সেই এক পাতার চিঠি জমা দেওয়া হল। সেটা দিয়ে এখন আবার ফিরে যাচ্ছি। কী নথি জমা করলেন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওটা বলতে পারবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আর ED।

প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বর্তমানে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদা পেশায় একজন চিকিৎসক। এছাড়াও তিনি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (Public Service Commission) সদস্য ছিলেন। যাকে নিশানা করে  শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'পাবলিক সার্ভিস কমিশনে দু-নম্বরির মাস্টার। এই যে BDO গুলো ম্যাক্সিমাম চুরি করেছে, ১৫-১৬, ১৬-১৭-, ১৭-১৮ যার আমি আরটিআই করেছিলাম। একটা পার্টের দিয়েছে। আরেকটা পার্টের দেয়নি। সময় নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবে দেবপ্রিয় মল্লিক PSC স্ক্যামের সঙ্গে যুক্ত।'


যে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাল্টা ব্যাখ্যা ও খোঁচা দেন মন্ত্রীর দাদা। দেবপ্রিয় মল্লিক বলেন, '২০১৬-র শেষ দিকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য পদ ছেড়ে দিই। ৫ জনের কমিটিতে ছিলাম, একা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। এটা কোনও খনি নয় যে, লুঠ হবে, যেটা হলদিয়াতে হয়।' এদিকে শুভেন্দুর মন্ত্রীর দাদাকে নিশানা প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের কটাক্ষ, 'যে সময়ের কথা বলছেন ওই সময় তো শুভেন্দু মন্ত্রিসভায় ছিলেন। এখন কী বদলে গেছে পদ তাই বদলেছে মত ? নারদ নিয়ে কোনও কথা বলছেন না কেন ? আসলে কাচের ঘরে বসে অন্যের দিকে ঢিল ছুড়ছেন।'

এদিকে, মন্ত্রীর দাদাকে নিশানা করার পাশাপাশি দিঘায় তাঁর বেনামে হোটেলও রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। 


আরও পড়ুন- 'এখনও অবধি নিজেকে অপরাধী বলে মনে করছি না, তদন্তের মুখোমুখি হতে প্রস্তত' এবিপি আনন্দে এক্সক্লুসিভ জ্যোতিপ্রিয়-কন্যা