অরিন্দম সেন ও রাজা চট্টোপাধ্যায়, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি: আলিপুরদুয়ার থেকে জলপাইগুড়ি, কোথাও ক্যামেরাবন্দি ব্ল্যাক প্যান্থার, কোথাও খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ। ‘দ্য জঙ্গল বুক’-এ মোগলির সঙ্গী বাঘিরাকে সকলেই চেনেন। আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে ফের দেখা মিলল সেই ব্ল্যাক প্যান্থারের। আবারও ক্যামেরাবন্দি বিলুপ্তপ্রায় ব্ল্যাক প্যান্থার। 


বন দফতর সূত্রে খবর, জঙ্গলের কোর এরিয়ায় একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ ব্ল্যাক প্যান্থারের তিনটি ছবি বন্দি হয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরায়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপক্ষেত্র অধিকর্তা (পশ্চিম) পরভীন কাসওয়ান জানিয়েছেন, ‘ব্ল্যাক প্যান্থার পাওয়া বক্সার জঙ্গলে জীব বৈচিত্র্য প্রমাণ করল। আমরা মাঝেমধ্যে ব্ল্যাক প্যান্থার দেখতে পাই। এ নিয়ে তৃতীয়বার দেখা গেল।’


অন্যদিকে, জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির পানবাড়ি এলাকায় খাঁচাবন্দি হয়েছে একটি চিতাবাঘ। কয়েকদিন ধরে চিতাবাঘের আনাগোনার খবর পেয়ে টোপ দিয়ে খাঁচা পাতেন বনকর্মীরা। শুক্রবার রাতে খাঁচাবন্দি হয় চিতাবাঘটি।


এ প্রসঙ্গে ময়নাগুড়ির রামসাইয়ের রেঞ্জার শুকদেব রায় জানিয়েছেন, ‘রামসাইয়ের পানবাড়িতে কলোনিতে, অফিসপাড়াতে চিতাবাঘ দেখা যাচ্ছিল। ধরার জন্য খাঁচা পাতা হয়েছিল। তাতেই চিতাবাঘ ধরা পড়ে। চিতাবাঘটি এলাকার গবাদি পশু নিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। গরুমারা জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিতাবাঘটিকে।’


বন দফতর সূত্রে খবর, বক্সা টাইগার রিজার্ভের একই স্থান থেকে একই ব্ল্যাক প্যান্থারের তিনটি ভাল ছবি ধড়া পড়েছে। তিনটিই ট্র্যাপ ক্যামেরার ছবি এবং শুধুমাত্র এই বছরেই ধরা পড়েছে। এটি একটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ব্ল্যাক প্যান্থার বলে বন দফতরের দাবি।


বক্সায় জীববৈচিত্র্যের মূল্যায়ন একটি ধারাবাহিক ঘটনা। এ জন্য সময়ে সময়ে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ক্যামেরা ফাঁদ লাগানো হয়। চলতি বছরেই এই বিরল এবং সুন্দর ছবিগুলি ধরা পড়েছে বলে বন দফতরের দাবি। গত বছরও বক্সা থেকে ব্ল্যাক প্যান্থার দেখা গেছে।


ব্ল্যাক প্যান্থার হল একটি সাধারণ চিতাবাঘ (প্যানথেরা পারডাস) যা প্রকৃতিতে মেলানিস্টিক। কিন্তু কালো রঙের কারণে এরা বিরল এবং বনে দেখা পাওয়া কঠিন। যদিও সুরক্ষার জন্য বন দফতর এর সঠিক অবস্থান গোপন রেখেছে। তবে এই ছবিটি বক্সা টাইগার রিজার্ভের কোর এরিয়ায় বন্দি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগেও দু’বার একইভাবে ধরা পড়েছিল ব্ল্যাক প্যান্থারের ছবি। তৃতীয়বার এই ছবি ধড়া পড়ায় বক্সার জঙ্গল যে এখনও সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্র্যময়, তা প্রমাণিত হওয়ায় উচ্ছ্বসিত বন দফতর।