শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: প্রথম বর্ষের মেডিক্যাল ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার কোচবিহারের (Coochbehar) এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে (MJN Medical College)। মৃতার নাম স্নিগ্ধা কুন্ডু। বাড়ি পূর্ব বর্ধমান (Purba Bardhaman) বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কী ঘটেছিল?
পুলিশ জানাচ্ছে, সোমবার সকালে মেডিক্যাল পড়ুয়া ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানতে পারে তারা। বছর চব্বিশের স্নিগ্ধা আদতে পূর্ব বর্ধমানের ক্ষুদিরাম পল্লীর বাসিন্দা। তাঁর দেহ, এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন বিল্ডিং থেকে উদ্ধার হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। প্রাথমিক ভাবে ধারণা, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খবর ছড়াতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। গত বছর আগস্টে, এক সন্ধ্যায় হস্টেলের ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিলেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়া প্রদীপ্তা দাসের দেহ। বছর ২২-এর এই ঝকঝকে তরুণীর মৃত্যুতে হতবাক হন তাঁর আত্মীয় প্রতিবেশীরা। MBBS ফাইনাল ইয়ারের এই ছাত্রীর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে। বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার। মেয়েকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। পরিবার সূত্রে খবর, বিদেশে ডাক্তারি পড়ানোরও ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায় ওই ঘটনায়। পরিবার সূত্রে খবর জানা যায়, শনি-রবি সহ ছুটির দিনগুলোয় বাড়ি চলে আসতেন প্রদীপ্তা। সোমবার আবার কলেজ যেতেন। সে বারও তাই গিয়েছিলেন। এমনকি ঘটনার দিন দুপুরে মায়ের সঙ্গে কথাও হয়, তারপরই সন্ধেয় আসে ভয়ঙ্কর খবর।
মেয়ের এভাবে চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি পরিবার। মৃতার এক আত্মীয় বলেন, 'ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। মনে হয় অতিরিক্ত চাপ পড়েছিল। কীভাবে যে কী হয়ে গেল বুঝতে পারছি না। কাল সকালে বাড়ি থেকে গেছে।' পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরেই, মানসিক অবসাদের কথা বলছিলেন তরুণী। তবে কী মৃত্যুর কারণ ডিপ্রেসন? সেই কারণেই কি চরম পরিণতি বেছে নিলেন এই ডাক্তারি পড়ুয়া? স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, 'মেয়েটি সম্পূর্ণ আলাদা। নিজের মতো থাকে। সম্ভবত ৬ মাস বাকি ছিল, তারপরই ডাক্তার হয়ে যেত। মানসিক অবসাদে ভুগছিল বোঝা যেত না।' ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন প্রদীপ্তা। অত্যন্ত মেধাবী। বই অন্ত প্রাণ। MBBS-এর পাঠ শেষের পথে। কিন্তু, কী এমন হল যে, জীবনে সাফল্যের সিঁড়িতে ওঠার সময়ই এই পরিণতি? ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে পড়তে পড়তে তৈরি হয়েছে রহস্য। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আত্মহত্যা করেন তরুণী। বেনিয়াপুকুর থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়।
স্নিগ্ধার ক্ষেত্রে একই রকম কিছু হয়েছে কিনা, তা অবশ্য রিপোর্ট এলে বোঝা সম্ভব। তবে হঠাৎ এমন খবরে দিশাহারা আরও একটি পরিবার, শোকের ছায়া পূর্ব বর্ধমানে স্নিগ্ধার বাড়ির এলাকায়।
আরও পড়ুয়া:সুস্থ শরীরে আয়ু বৃদ্ধি করতে চান? পাতে রাখুন এই খাবার