সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা: বউবাজারে ফের বাড়ি বিপর্যয়। একটি বাড়ির ছাদের একাংশ ভেঙে পড়ল এবার। এই ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন বলে খবর। নতুন করে বাড়ি বিপর্যয়ের জন্য মেট্রোকেই দুষছেন স্থানীয়রা। ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সকলে। বউবাজারে মাটির নীচ দিয়ে মেট্রোর গ্রিন লাইনের কাজ চলাকালীন এমন একাধিক বাড়িতে এর আগে ফাটল ধরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়েও নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। সেই আতঙ্কই ফিরল নতুন করে। (Bowbazar House Collapse)
রবিবার ১৬০ নম্বর বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে একটি বাড়ির ছাদের একাংশ ভেঙে পড়ে। যে বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে আজ, সেটি পুরনো হলেও, বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করা হয়নি সেটিকে। মেট্রোর গ্রিন লাইনের কাজের জন্য বেশ কিছু বাড়ির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ১৪টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ওই এলাকা থেকে। মাস সাতেক আগে বাড়িতে আবারও ফেরত পাঠানো হয় তাঁদের মেট্রোর তরফে। (Kolkata Metro)
এদিন ওই এলাকাতেই তিন তলা বাড়ির নীচের অংশ ভেঙে পড়ে। বিপর্যয়ের সময় একজন বাসিন্দা আঘাত পান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয় পুলিশ, পৌঁছন কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা, মেট্রোরেলের আধিকারিকরা পৌঁছন, পৌঁছন বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্য়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি, নয়নার দাবি, যেদিন থেকে মেট্রোর গ্রিন লাইনের কাজ শুরু হয়েছে, সেই থেকেই বউবাজার এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ফাটল ধরতে শুরু করে। মেট্রোর এক আধিকারিকের সঙ্গে এদিন বচসাতেও জড়িয়ে পড়েন স্থানীয়রা।
আহত ব্যক্তি জানান, দুপুর ১টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। বাথরুমে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় ভেঙে পড়ে। আর এক ব্যক্তি বলেন, "বাড়ি পুরনো ছিলই। কিন্তু মেট্রো চলাচলের ফলে আরও বেশি কম্পন অনুভূত হচ্ছে। প্রতিদিনই এমনটা হচ্ছে...নিরাপদ বোধ করছেন না কেউ।" মেট্রোর আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন নয়নাও। তিনি বলেন, "২০১৪ সাল থেকে এখানকার বিধায়ক আমি। ২০১৯ সালের আগে এই সমস্যা হয়নি। বাড়ি পড়ে গিয়েছে দুর্গাপিতুরি স্যাঁকরা পাড়া লেনে। তার আগের গলিই মদন দত্ত লেন। এখানেও যে ফাটল ধরেনি তা নয়। এই বাড়িটা এঁরা যা বলছেন...একজন আহত হয়েছেন। মাথায় লেগেছে। ঈশ্বরের অসীম কৃপা যে প্রাণহানি ঘটেনি। কিন্তু এঁদের তো ব্যবস্থা করতে হবে। সকলে বলছেন, ছোট ফাটল ছিল। সেগুলো বড় হচ্ছে।"
এদিন বিপর্যয়ের পর মেট্রোর তরফেই বাড়িটি মেরামত করার কাজ শুরু হয়। পুনরায় যাতে ভেঙে পড়তে না পারে, তার জন্য় লোহার রড আনা হয়। এলাকার কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। মেট্রো রেলের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মেট্রোর এক আধিকারিক জানান, আপাতত বাড়িটাতে থাকা যাবে। তাঁরা মেরামতির বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু আজ কিছু হবে না বললেই কি সব মিটে গেল? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা।
মেট্রোর এক আধিকারিক দাবি করেন, বাড়ির জং ধরা অংশটি ভেঙে পড়ে। বাড়িটি পুরনো। তার পরও মেরামত করে দিচ্ছেন তাঁরা। যদিও স্থানীয়দের দাবি, বাড়ির 'ফিট সার্টিফিকেট' আছে তাঁদের কাছে। বাড়িটি বিপজ্জনক বলে চিহ্নিতই হয়নি।