কলকাতা: তিনি চিরকাল চেয়েছিলেন, শিল্প আর কৃষি হাতে হাত রেখে পাশাপাশি চলুক। বারে বারে মুখ খুলেছিলেন শিল্প নিয়ে, কৃষি নিয়ে। তৃণমূল সরকারের বিভিন্ন নীতির তিনি বিরোধিতাও করেছে দ্ব্যর্থহীন ভাষায়। তৃণমূল সরকার প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দর সম্পাদক সুমন দে-কে কী বলেছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য (Buddhadeb Bhattacharjee)?
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যের কথায়, 'রাজ্যের দিকে তাকিয়ে সমালোচনাটা তো করতে হচ্ছে। পাড়ার জলসাটা এখন সরকারি জলসা হয়ে গিয়েছে। পাড়াতে সব উৎশৃঙ্খলতা, হিংস্রতা চলছে। কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। আমাদের সময়ও ২-১ বার এই প্রবণতা দেখা গিয়েছে তবে তা ব্যতিক্রম। আমরা সবকিছুর উর্ধ্বে ছিলাম দাবি করছি না। দু-একটা ভুল আমাদেরও হয়েছে, অন্তত আমার মনে হয়েছে। কিন্তু এখন পাড়ার উৎশৃঙ্খলতাটা চলে এসেছে অন্য জায়গায়। পাড়ার মোড়ে লাল-নীল রঙের তিনবাতি আর জলসা। এভাবে সরকার চলছে! সরকার আদৌ চলছে বলে তো মনে হচ্ছে না। আপনি যদি বলেন চলছে, তাহলে আমি বলব পিছন দিকে চলছে। একে বলে পশ্চাৎগতি। পিছোতে পিছোতে ৫ বছর পরে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব জানি না। উৎসবের জন্য টাকা, ক্লাবের জন্য টাকা। গত ৬ মাসে আপনি সরকারের খরচের হিসেব বের করুন। এটা বিপজ্জনক প্রবণতা। সরকারের কোনও প্রায়োরিটি নেই। দিশা-লক্ষ্য সব হারিয়ে গিয়েছে। এর ফল পশ্চিমবঙ্গ ভুগবে।'
নিজেদের সরকারকে কখনও নির্ভুল বলে বর্ণনা করতে চাননি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য। বলেছিলেন, 'আমাদের সরকারের যে কয়েকটা ভুল আমার চোখে পড়েছে, তার মধ্যে প্রথম হল, আমাদের শিল্প নিয়ে আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল। নন্দীগ্রামে আমরা জমিতে হাত দেওয়ার আগে যা রটে গেল, সেটা উচিত ছিল না। তার মানে ক্ষেত্রটা আমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতিই ছিল। পার্টিতে কিছু প্রবণতা আমার চিহ্নিত করেছিলাম। সাধারণ নাগরিক জীবনে হস্তক্ষেপ, মাতব্বরি.. আমরা এক এক করে এলাকা ধরে এগুলো বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলাম। বুঝেছিলাম, মানুষ এসব মাতব্বরি একদম চান না। সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিপিএম হাত বাড়াচ্ছে, এ হতে পারে না। কিছু বেনো জল কিছু সরে গিয়েছে, কিছু এখনও সরেনি। প্রত্যেকটা জেলা ধরে, অঞ্চল ধরে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।'