সুনীত হালদার, হাওড়া: আইনি জটিলতার জেরে হাওড়া পুরসভার (Howrah Municipal Corporation) ভোট (Municipal Election) এখনও সম্ভব হয়নি। কয়েক বছর ধরে হাওড়ায় নির্বাচিত পুরবোর্ড নেই। প্রশাসকমণ্ডলী হাওড়া পুরসভা চালাচ্ছে। এরই মধ্যে হাওড়া পুরসভার বাজেট (Budget) পেশ করা হল। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য বাজেট পেশ করা হয়। এবারের বাজেটে উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা সংযুক্ত ওয়ার্ডগুলিতে সঠিক পরিষেবা দেওয়ার উপর বেশি জোর দেওয়া হয়ছে। হাওড়া পুরসভার পিছিয়ে পড়া সংযুক্ত এলাকা বলে পরিচিত ৪৫ থেকে ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের সার্বিক উন্নয়নেই জোর দেওয়া হয়েছে বাজেটে।


হাওড়া পুরসভার বাজেট


হাওড়া পুরসভায় প্রশাসকমন্ডলীর পক্ষ থেকে ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের বাজেট পেশ করা হয়। মুখ্য প্রশাসকের নেতৃত্বে পুর প্রশাসকমন্ডলীর সদস্যরা এই বাজেট নিয়ে আলোচনা করে তা পেশ করেন। সংযুক্ত এলাকার উন্নয়নের জন্য ৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বিশেষত কাঁচা রাস্তা পাকা করা, রাস্তায় বাতিস্তম্ভ লাগানো এবং নিকাশি ব্যবস্থা উন্নত করার মতো বিষয়গুলির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।


হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, সংযুক্ত এলাকা বলে পরিচিত এই ৬টি ওয়ার্ডের অনেক জায়গাতেই এখনও কাঁচা রাস্তা রয়েছে। বেশিরভাগ জায়গাতেই নেই কোনও আলোর ব্যবস্থা। সামান্য বৃষ্টিতেই জমে যায় জল। সমস্যা রয়েছে পানীয় জলেরও। দীর্ঘদিন ধরেই হাওড়া পুরসভার এই ওয়ার্ডগুলি উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে রয়েছে। এবার এই ওয়ার্ডগুলির উন্নয়নে জোর দেওয়া হচ্ছে।


হাওড়ায় ঘাটতিশূন্য বাজেট


বাজেটে সংযুক্ত এলাকার উন্নয়নে জোর দেওয়া প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘এবার ৩৫৬ কোটি টাকার ঘাটতিশূন্য বাজেট পেশ করা হয়েছে। সংযুক্ত এলাকার এই ৬টি ওয়ার্ড দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত ছিল। তাই এই ওয়ার্ডগুলির উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। তবে বাকি ৪৪টি ওয়ার্ডেও সার্বিক উন্নয়ন করা হবে।’


আরও পড়ুন Howrah-Bally Bill: বিজেপি-র পদলেহন করেন, রাজ্যপালকে তীব্র আক্রমণ কল্যাণের


বিরোধীদের অভিযোগ, নির্বাচিত পুরবোর্ড না থাকায় পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি পুরসভার আয়ও কম হচ্ছে।


এই অভিযোগ উড়িয়ে সুজয়বাবুর পাল্টা দাবি, ‘পুরবোর্ড না থাকায় সামান্য অসুবিধা হলেও, এবার পুরসভার আয় বেশি হয়েছে। উন্নয়ন হবে।’


হাওড়া-বালি পুরসভা


গত নভেম্বর মাসে রাজ্য বিধানসভায় হাওড়া-বালি পুরসভা বিভাজন প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়। পরে বালিকে বাদ দিয়ে হাওড়াকে পৃথক পুরসভা করতে সংশোধনী বিল পাশ করানো হয়। তারপর সেটি পাঠানো হয় রাজ্যপালে স্বাক্ষরের জন্য। কিন্তু রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, বিলটি নিয়ে কিছু প্রশ্ন রয়েছে তাঁর। রাজ্যকে তা জানিয়েছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও রাজ্যের তরফে ব্যাখ্যা মেলেনি। এরপর ওই বিল কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছয়। বিল পাশ না হওয়া পর্যন্ত হাওড়ায় পুরভোট সম্ভব নয় বলে জানানো হয়। এই আইনি জটিলতায় আটকে হাওড়ার পুরভোট। এর জন্য রাজ্যপালের সমালোচনা করেছেন সুজয়বাবু।