কমলকৃষ্ণ দে-পূর্ব বর্ধমানঃ বর্ধমান মহারাজার রাজা  রানির রথ (Burdwan Raja Rani Rath Yatra2022) দেখতে আজও মানুষ বহু দূর থেকে আসে। ২ বছর করোনার (Covid 19) কারনে রথের মেলা ( Rath Yatra Fair) না বসলেও এবারে পুরানো রীতি মেনেই শুরু হয়েছে বর্ধমান মহারাজার রাজা ও  রানির রথ।বসেছে মেলাও।আসছেন ভক্তরাও। বিশেষ পূজা পাঠের পর রথ বের করা হয়।


আরও পড়ুন, ২৮৩ বছরে পা, করোনাকালে ২ বছর বন্ধ থাকার পর রথের চাকা গড়াল গুপ্তিপাড়ায়


 রানির রথ আগে ছিল রূপোর, রাজার রথ পেতলের


বর্ধমান রাজবাড়ি সংলগ্ন  সোনাপট্টিতে রয়েছে লক্ষী নারায়ণ জিউ মন্দির। সেখানেই রয়েছেন সাড়ে তিনশো বছরেরও পুরনো রাজা রানির রথ। মহতাব চাঁদের আমলে ছিল পাঁচ তলার রথ।এখন তা অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে। এখানে দুটি রথ রয়েছে।একটি রাজার রথ।অন্যটি রাণীর।  রানির রথ আগে ছিল রূপোর। এখন কাঠের। রাজার রথ পেতলের। এখানে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা থাকে না। বদলে রাজার রথে উঠে বসেন গোপাল, রানীর রথে লক্ষ্মীনারায়ণ। আগে এই রথের জাঁকজমকই ছিল আলাদা। রথ উপলক্ষে হতো যাত্রাপালা,রামায়ন পড়ে শোনানো হত,ঝাড় বাতিতে সেজে উঠতো লক্ষী নারায়ণ জিউ মন্দির। তবে রাজার রাজত্ত্ব চলে যাবার পর জৌলুস না হলেও এখন প্রথা মেনে পুজা অর্চনার পর রথের রশিতে টান দেওয়া হয়।


প্রথা মেনে মহারাজকুমার প্রণয়চাঁদ মহতাব এই রথের সেবায়ত


এই রথের রশিতে টান পড়ার পরই বর্ধমানের বাকি রথের যাত্রা শুরু হত।প্রথা মেনে মহারাজকুমার প্রণয়চাঁদ মহতাব এই রথের সেবায়ত। তবে বয়সের কারনে এবারে তিনি আসতে পারেন নি।এই রথ রাজবাড়ি কম্পাউণ্ডের মধ্যেই থাকে।আগে এই রথের বিরাট মেলা বসত।হাজার হাজার লোক আসত।গমগম করত।সেসব অস্তমিত হয়েছিল আগেই। কোভিডের অভিশাপে দুবছর মেলা না বসলেও এবারে বসেছে।রাজবাড়ী লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত উত্তম মিশ্র জানান, এখানে আগে যে দুটি রথ ছিল তার একটি রূপোর। অন্যটি পিতলের।রুপোর রথ আর নেই।ভিতরে এখন থাকে কাঠের রথ।একটি রথে থাকেন গোপাল।অন্যটিতে লক্ষীনারায়ণ জিউ।


এবারেও এখানেই প্রথম রথের রশিতে পড়লো টান, বাকি শহরে তারপর


এবারেও এখানেই প্রথম রথের রশিতে টান পড়লো।বাকি শহরে তারপর। ছোটোবেলার দেখা পুরানো ঐতিহ্যের টানে এখনও বহু মানুষ আসেন এখানে।সেই রুপোর রথ,বড় বড় ঘোড়া,বিরাট মেলা,প্রচুর লোক সমাগম।তবে সেইসব এখন অতীত,পলেস্তারা খসে পড়া ভগ্ন রাজবাড়িতে প্রথা মেনে আজও চলছে রথ উৎসব।