কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান : বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের গবেষনা স্তরে (পিএইচডি) ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত হওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই বিতর্কের অন্ত নেই। তাহলে কি জেলবন্দি মাওবাদী বন্দি অর্ণব দামকে নিয়েই জটিলতা তৈরি হল? এই জল্পনার মধ্যে অবশেষে মুখ খুলল বিশ্ব বিদ্যালয়।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে পিএইচডি করতে চেয়েছিলেন সংশোধনাগারে থাকা মাওবাদি বন্দি অর্ণব দাম। তিনি বরাবরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন। সবাইকে অবাক করে সেই অ্যাডমিশন টেস্টে প্রথম হন অর্ণব। সংশোধনাগার থেকে পুলিশি প্রহরায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ইন্টারভিউও দিয়েছিলেন তিনি। মেধাতালিকায় অর্ণবই ছিলেন শীর্ষে। কিন্তু তারপর কোনও নির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়েই ইতিহাসে পিএইচডির ভর্তি পদ্ধতি স্থগিত রাখে বিশ্ববিদ্যালয়।
এই নিয়ে জল্পনা চলছিলই। তারই মাঝে মুখ খুলল বর্ধমান বিশ্ব বিদ্যালয়। জানানো হয়েছে, পিএইচডি করতে গেলে যে অফ লাইন কোর্স ওয়ার্ক হবে, সেই সময় কীভাবে উপস্থিতি সুনিশ্চিত হবে অর্ণবের। কারণ তিনি সংশোধনাগারে বন্দি। তাঁর নিরাপত্তারই বা কী ব্যবস্থা থাকবে ? এই সব প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানতে চাওয়া হয়েছে হুগলি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের কাছে। তাই আপাতত স্থগিত করা হয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের পিএইচডি কোর্সের ভর্তি প্রক্রিয়া।
অর্ণব দাম-এর নাম যেহেতু মেরিট লিস্টের শীর্ষে রয়েছে এবং ভর্তি প্রক্রিয়া যেহেতু তালিকা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে হয় তাই ভর্তি প্রক্রিয়ার জটিলতা এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্র।
যদিও ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ তনভীর নাসরিন জানিয়েছেন, ভর্তি নিয়ে বিভাগের তরফে কোনও আপত্তি নেই।তিনি বলেন, জেলবন্দি অবস্থায় অনেকে তো ভোটে লড়ে জেতেনও ! যদি জেলবন্দি অবস্থায় ভোটে লড়াই করা যায়, তাহলে শিক্ষা লাভ করা যাবে না কেন?
ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবারই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের পিএইচডি ভর্তি প্রক্রিয়ার দিন নির্দিষ্ট ছিল। ঠিক তার আগেই নোটিশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আপাতত ইতিহাস বিভাগের পিএইচডি ভর্তি প্রক্রিয়া অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে । পরবর্তীতে আবার ভর্তির তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। যদিও ইতিহাস ছাড়া অন্য সব বিভাগের ভর্তি প্রক্রিয়া অপরিবর্তিতই আছে।
আরও পড়ুন :