সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা : বেসরকারি বাস-মিনিবাসে (Private Bus-Mini Bus) উঠলেই ৭ টাকার জায়গায় অন্তত ১০ টাকা ভাড়া গুণতে হচ্ছে। অথচ সরকারিভাবে ভাড়া বাড়েনি। মালিক সংগঠন ইচ্ছেমতো ভাড়া বাড়িয়েছে বলে স্বীকার করছেন বাস কর্মীরা (Bus Workers)। তাঁদের দাবি, ভাড়া না বাড়ালে বাস চালানো সম্ভব নয়। রোজকার হয়রানি এড়াতে যাত্রীদের একাংশও চাইছেন ভাড়া বাড়িয়ে সঠিক তালিকা দেওয়া হোক।
সম্প্রতি একটি জনস্বার্থ মামলার নির্দেশে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) জানিয়ে দিয়েছে, বেসরকারি বাসে ভাড়ার তালিকা (Fare Chart) রাখতেই হবে। কিন্তু সেই নির্দেশ কি আদৌ মানা হচ্ছে ? যাত্রীদের অভিযোগ, কলকাতা (Kolkata) ও শহরতলির কোনও বেসরকারি বাস, মিনিবাসে ভাড়ার তালিকা তো নেইই। উল্টে কনডাক্টরদের মর্জিমতো ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যে বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়ায়নি সরকার। কিন্তু আদপে যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া গুনতেই হচ্ছে। কলকাতার প্রায় সব রুটেই দেখা যাচ্ছে একই ছবি। আগে বেসরকারি বাস, মিনিবাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল ৭ টাকা। লকডাউনের পর থেকে বাসে উঠলেই অন্তত ১০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। ৯ টাকা ভাড়া বেড়ে কোনও বাসে হয়েছে ১২, কোথাও বা ১৫। ১১ টাকা থেকে ভাড়া বেড়ে হয়েছে ১৫ অথবা ২০। যে দূরত্ব আগে ১৫টাকায় যাওয়া যেত, সেটাই এখন ২০-তে গিয়ে ঠেকেছে। একাধিক রুটের বাসেই একই চিত্র। বর্ধিত ভাড়া নিয়ে নিত্যদিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর, ২০১২, ১৪ ও ১৮ সালে বেসরকারি বাস, মিনিবাসের ভাড়া বাড়িয়েছিল। ২০১৮ সালে ডিজেলের দাম ছিল ৫৮ টাকা, সেটাই ১০০ ছুঁয়ে এখন কিছুটা কমে ৯০-এর ঘরে। বাস কর্তৃপক্ষের দাবি, ইনসিওরেন্স থেকে শুরু করে মেনটেন্যান্সের খরচ বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। ভাড়া না বাড়ালে বাস চালানো সম্ভব নয়। কিন্তু অবস্থানে অনড় রাজ্য সরকার। রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেছেন, 'বেশি নেওয়ার কথা নয়। নোটিফিকেশন জারি করেছি। কয়েকদিন আগে মেদিনীপুরে এই ধরনের ঘটনা নজরে এসেছিল। আমরা ১০ হাজার টাকা ফাইন করেছি। সরকার বাস ভাড়া বাড়াবে না যাত্রীদের স্বার্থে। অভিযোগ জানাক যাত্রীরা। পরিবহণ দফতর ব্যবস্থা নেবে। চার্ট রাখতে হবে। অতিরিক্ত নেওয়া যাবে না।'
আরও পড়ুন- 'আমাকে কিনে কেউ আনেনি, বিশ্বাসঘাতকতা করিনি' দাবি বায়রনের
ভাড়া নিয়ে বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন ও রাজ্যের মধ্যে টানাপোড়েন চলছেই। এসবের মাঝে পড়ে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
আরও পড়ুন: বাড়িতে সহজ পদ্ধতিতে তৈরি করুন আমন্ড মিল্ক