কলকাতা: খুব শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গ-সহ (west bengal) সারা দেশে সিএএ (CAA) কার্যকর (imply) হবে। কেউ আটকাতে পারবে না। হুঙ্কার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (home minister for state) নিশীথ প্রামাণিকের (nisith pramanik)। সঙ্গে সংযোজন, 'কারও নাগরিকত্ব (citizenship) কেড়ে নেওয়ার জন্য এই আইন (Law) নয়।' এর আগেও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বলবৎ করার দাবিতে সুর চড়াতে শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের (panchayat election) মুখে তাঁর কথায়  সিএএ বলবৎ করার হুঙ্কার। 


আগেও এক ইঙ্গিত...
সপ্তাহ তিনেক আগেই সিএএ নিয়ে সরব হতে শোনা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে। বলেছিলেন ‘খুব তাড়াতাড়ি পশ্চিমবঙ্গে সিএএ কার্যকর হবে। কে দেবে, কে দেবে না, সেটা দেখে নেওয়া যাবে। শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, সারা দেশেই কার্যকর হবে সিএএ।' কোচবিহারে প্রকাশ্য সভায় সিএএ নিয়ে এ কথা বলেছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। পাল্টা আক্রমণ ধেয়ে আসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর দিক থেকেও। বলেন, ‘কোনও অবস্থাতেই পশ্চিমবঙ্গে সিএএ কার্যকর করতে দেওয়া হবে না। গুজরাতে ভোট, তাই ওখানে সিএএ কার্যকর করতে হচ্ছে।' শুধু নিশীথ নন, এক কথা বার বার শোনা গিয়েছে আরও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কথায় যাঁর অন্যতম শান্তনু ঠাকুর। সপ্তাহখানেক আগেই ফের তিনি বলেন, 'বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সিএএ-র বিরোধিতা করছেন এবং ১৮০ ডিগ্রি বিপরীত দিকে যেভাবে বিষয়টিকে তুলে ধরছেন, এটাকে আমরা সমস্ত উদ্বাস্তু ও মতুয়া সমাজ, নমশূদ্র, রাজবংশী...যাঁরা উদ্বাস্তুদের মধ্যে পড়েন তাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে বঞ্চিত । এই বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করে দিয়েছেন। সিএএ আমাদের অধিকার। সংবিধানে যখন সেটা সংসদে পাশ হয়ে গেছে, তখন কারও অধিকার নেই এভাবে প্রকাশ্যে সেই সংবিধানের বিরুদ্ধে কথা বলা। উনি যেটা বলছেন, সেটাও সংবিধান-বিরোধী কথা। ওঁর অধিকার নেই এনিয়ে কথা বলার। উনি রাজনীতি, দ্বিচারিতা করছেন। এই দ্বিচারিতা আমরা ভেঙে দেব। বাংলার ক্ষেত্রে কী হবে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক চিন্তা করবে। এই সমস্ত বিষয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিচার করার পর, আগামীদিনে পশ্চিমবঙ্গে এটা চালু করব। এটা বাস্তব কথা। কেউ ঠেকাতে পারবে না। কারও ক্ষমতা নেই।' ‘খুব দ্রুত কার্যকর হবে সিএএ, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা’, রাস পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ঠাকুরনগরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মেঘাওয়াল। ঠাকুরনগরে এসে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে আশ্বাস কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর। বারবার শুধু বলে, আগে করে দেখাক, পাল্টা চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের। কয়েক মাস আগে এক দাবি করেছিলেন আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন মেঘাওয়ালও। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ঠাকুরনগরে এসে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে আশ্বাস দেন তিনি। সঙ্গে বলেন,‘খুব দ্রুত কার্যকর হবে সিএএ, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’ শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নন, রাজ্য বিজেপি নেতা ও বিধায়কদের মুখেও এক দাবি শোনা গিয়েছে বার বার। গত কাল ভূপতিনগরের সভাকেও এক বার্তা দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, 'সিএএ বহু চর্চিত বিষয়, সিএএ-র দাবি বারে বারেই করেছি। যেমন কথা তেমন কাজ, সিএএ আইন পাশ হয়েছে। কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কথা আইনে নেই। আগামী দিনে এরাজ্যে সিএএ চালু হবে। দম থাকলে সিএএ আটকে দেখান।'


এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের অবস্থান...
তৃণমূল যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালুর বিরোধী, সেই নিয়ে বার বার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মে মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যের পাল্টা দিতে গিয়ে বলেন, ‘সিএএ বাংলায় হবে না, শুধু নির্বাচনের সময় ইস্যু তোলা হয়। এটা তো ওদের দলের নিজস্ব ব্যাপার। সেই দায় আমাদের ঘাড়ে কেন চাপাচ্ছেন। আমরা কোনও সিএএ, এনআরসি  চাই না। আমরা চাই সবাই একসঙ্গে থাকুক।' চলতি মাসের গোড়াতেও কৃষ্ণনগরের সভা থেকে এক বার্তা দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। এই নিয়ে বিস্তর তরজাও হয়েছে তৃণমূল নেতা-বিধায়ক ও রাজ্য বিজেপি শিবিরের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত কোথাকার জল কোথায় গড়ায়, এখন সেটাই দেখার।


আরও পড়ুন:জাপানকে হারিয়ে জার্মানিকে অক্সিজেন দিল কোস্তা রিকা