সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: রাজ্য সরকারকে তিরস্কার করা হোক বা মন্ত্রীর মেয়ের চাকরি কেড়ে নেওয়া, বিগত কয়েক মাসে বাংলার ঘরে ঘরে পরিচিতি তৈরি হয়েছে তাঁর। কেউ আইনের রক্ষক বলে ভক্তিভাব প্রকাশ করেছেন, তো কেউ আবার বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি তাঁর পক্ষপাতিত্ব রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। এজলাসে আইনজীবীর সঙ্গে তাঁর তীব্র বাদানুবাদের ভিডিও রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয়। তা নিয়ে ফের চাঁচাছোলা মন্তব্য শোনা গেল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখে (Justice Abhijit Gangopadhyay)।


আদালতে ফের চাঁচাছোলা মন্তব্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের


সম্প্রতি আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। দু'জনের অম্লমধুর সম্পর্কে প্রায় সকলেই অবগত। এমনকি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যাের বিচার্য বিষয় বদল করতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠিও লিখেছেন বার অ্যাসোসিয়েসনের প্রধান অরুণাভ। তার পরই মঙ্গলবার এমন মন্তব্য করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। 


এ দিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে একটি মামলার শুনানি চলছিল। তার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও বিষয়ের সংযোগও ছিল না। কিন্তু পরিচিত কিছু আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এমন মন্তব্য করেন বলে সূত্রের খবর। তিনি বলেন, "আড়াই বছরে অনেক রায় দিয়েছি, দেড় বছর কোর্ট বন্ধ ছিল। অনেক ঘরে অর্ডার পেন্ডিং থাকে, খোঁজ নিন। আমি নাকি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে মাতামাতি করি! আমি দুর্নীতি পেলে সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করি।"


আরও পড়ুন: Manik Bhattacharya: সিবিআই-এর খাতায় তিনি 'বেপাত্তা', বিধানসভায় এলেন মানিক, বললেন, '১০০% সহযোগিতা করেছি'


সম্প্রতি নিউ সেক্রেট্যারিয়ট ভবনের একটি অংশ কলকাতা হাইকোর্টের হাতে হস্তান্তর করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) খোদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য-সাক্ষাতের প্রসঙ্গও এ দিন আদালেত টেনে আনেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "আপনি ভাল করছেন। আপনি আপনার মতো চালিয়ে যান, আমাকে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিউ সেক্রেটারিয়েটে অনুষ্ঠানের দিন মুখোমুখি হলে আমাকে একথা বলেন তিনি।"


নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকেই ঘরে ঘরে পরিচিতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের


আইনজীবী অরুণআভ ঘোষের সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বাক্য বিনিময় নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই তপ্ত আদালত চত্বর। অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের আদালতে উপস্থিতির দিন ভিডিওগ্রাফিতে অনুমতি দেওয়া নিয়েও বিতর্ক হয়। সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের যুক্তি, তাঁর আশঙ্কা ছিল, ভিড়ের মধ্যে কিছু ছুড়ে মারতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল। তাই ভিডিওগ্রাফির অনুমতি দিয়েছিলেন।