কলকাতা: যোগদান অনুষ্ঠান হয়নি এখনও। তবে BJP-তেই যাচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্টের পদত্যাগী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেই সেই ঘোষণা করলেন তিনি। আর সেখান থেকেই রাজনৈতিক দল হিসেবে তৃণমূলের আয়ুকাল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে শোনা গেল তাঁকে। (Abhijit Ganguly)


মঙ্গলবার সকালে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে ডাকযোগে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের চেম্বারে গিয়েও পদত্যাগপত্রের প্রতিলিপি জমা দেন। এর পর দুপুরে সাংবাদিকবৈঠক করে BJP-তে যাওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। সেখান থেকেই তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন। এমনকি রাজ্য রাজনীতিতে জোড়াফুল শিবিরের মেয়াদও বেঁধে দেন। (Abhijit Ganguly on TMC)


লোকসভা নির্বাচনের আগে এই মুহূর্তে অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূলে। দলের নেতারা প্রকাশ্যে পরস্পরের দিকে আঙুল তুলছেন যেমন, তেমনই তাপস রায়ের মতো দীর্ঘদিনের তৃণমূল নেতা দল ছেড়েছেন, ইস্তফা দিয়েছেন বিধায়ক পদ থেকে। সেই প্রসঙ্গে এদিন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "কেন ক্ষোভে ফুঁসছেন সকলে, দেখুন। কেন দল ছাড়ছেন, নিশ্চয়ই বলবেন ওঁরা। তবে আমি যেটা বুঝতে পারছি, তৃণমূল ভিতরে ভিতরে ভেঙে পড়ছে। এই তৃণমূল আর বেশি দিন নেই।"


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: ‘মুখ ফস্কে সত্যিটা বলে ফেলেছেন’, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কোন মন্তব্যে এমন প্রতিক্রিয়া অভিষেকের?


যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'প্রকৃত রাজনীতিক' বলে উল্লেখ করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূলকে নিয়ে তাঁর বক্তব্য, "এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূল নামের যে দলটি রয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ ভাবে একটি দুষ্কৃতীদের দল। এটাকে রাজনৈতিক দল বলে মনেই করি না আমি। এটা একটা যাত্রাপার্টি। এদের যাত্রাপালার নাম মা-মাটি-মানুষ। যাত্রাদলে যেমন বিবেক নামের চরিত্র থাকে। এদেরও কেউ কেউ হঠাৎ করে বিবেকবান হয়ে ওঠেন। সেখানে যেমন ছোটলোক, মাতালের চরিত্র থাকে, এখানেও আছে। একটা সম্পূর্ণ দুর্নীতিগ্রস্ত দল। কিছু ভাল লোক আছেন, ভুল করে ঢুকে পড়ে আর বেরোতে পারছেন না। কালই একজন পণ্ডিত মানুষের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে অভিযোগ করলেন।"


শুধু তাই নয়, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বামেদের পতন শুরু হয়ে গিয়েছিল যেমন, তেমনই ২০২৪ সালে তৃণমূলের পতনের সূচনা ঘটবে বলে এদিন ভবিষ্যদ্বাণী করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, "তৃণমূল দলটি যেমন নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে, ভিতরে ভিতরে নিজেদের চাপেই ভেঙে পড়ছে, তাতে আমার মনে হচ্ছে, ২০০৯ সালে সিপিএম-এর যা অবস্থা হয়, ২০২৪ সালে সেই অবস্থা হবে তৃণমূলের। ২০২৬ পর্যন্ত টিকবে নাকি দলটা? মাত্র দু'তিনটে গ্রেফতারি প্রয়োজন। তাহলেই দেখবেন দলটি ভেঙে পড়ে গিয়েছে। দলটি নেই। ২০২৬ পর্যন্ত টিকবেই না।"