কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের কিছু বিচারপতির ভূমিকা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন  অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দু'দিন পরই BJP-তে যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। রাজনীতির ময়দানে অবতীর্ণ হওয়ার আগে ফের আক্রমণ করেছেন তৃণমূলকে। নাম না করে ডায়মন্ড হারবারে দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা করার চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছেন। সেই আবহেই এবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক। (Abhishek on Abhijit Ganguly)


মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে BJP-তে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন কলকাতা হাইকোর্টের পদত্যাগী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বেছে বেছে কেন BJP-তেই যোগ দিচ্ছেন, কার তরফ থেকে আগে প্রস্তাব যায়, সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। উত্তরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, দু'তরফেই উদ্যোগ ছিল। BJP যেমন তাঁকে 'অ্যাপ্রোচ' করে, তিনিও BJP-কে 'অ্যাপ্রোচ' করেন। (Abhishek Banerjee)


এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "BJP-র নেতারা আমার নাম নেন না। তবে উনি একটা সত্যি কথা বলে দিয়েছেন। হয়ত মুখ ফস্কেই বলে ফেলেছেন। তবে সত্যিটাই বলেছেন। উনি বলেছেন, আমি BJP-কে অ্যাপ্রোচ করেছিলাম এবং BJP আমাকে অ্যাপ্রোচ করেছিলাম। এই কথাটা খুব ইন্টারেস্টিং। মন্তব্যের গভীরতা বুঝতে হবে। উনি তার মানে স্পষ্ট ভাবে বলছেন, আমি যখন বিচারব্যবস্থায়, বিচারকের আসনে বসে যে বিভিন্ন শুানানিতে রায় দিয়েছি বা আমার এজলাসে যে সমস্ত মামলার শুনানি হয়েছে, সেই সময় BJP আমার সঙ্গে যোগাযোগে ছিল এবং আমি BJP-র সঙ্গে যোগাযোগে ছিলাম। বাকিটা আমি সাধারণ মানুষের কাছে ছেড়ে দিলাম।"


আরও পড়ুন: Abhijit Ganguly: CPM-এ গেলেন না কেন? 'ধর্মে বিশ্বাসী তাই', জবাব অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের


এদিন সাংবাদি বৈঠকে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যদিও জানান, খুব কম সময়েই BJP-তে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, "খুব কময় সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দু'তরফেই প্রস্তাব ওঠে। তবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে গত সাত দিনে। আমি ছুটিতে ছিলাম। ওই সময় আদালতে কোনও মামলার রায় দিইনি। BJP আমাকে অ্যাপ্রোচ করে এবং আমি BJP-কে অ্যাপ্রোচ করি।" BJP-র তরফে কে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাঁর নাম যদিও খোলসা করতে রাজি হননি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 


বিচারপতি পদে আসীন থাকাকালীন নিয়োগ দুর্নীতি-সহ একের পর এক মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হোক বা আদালতের ভিতরে এবং বাইরে বিভিন্ন মন্তব্যের জেরে বিতর্কে জড়িয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির আসনে বসে তিনি 'রাজনৈতিক' মন্তব্য করছেন বলে সুপ্রিম কোর্টেও যায় তৃণমূল। BJP-র প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও ওঠে। যদিও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, গত পাঁচ-ছ'দিনে BJP-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি, তারাও করে। তখন আদালতে বসেননি। খালি কিছু মামলা ছেড়ে দেওয়ার জন্য সোমবার এজলাসে বসতে হয়েছিল তাঁকে। বিচারপতির আসনে থাকাকালীন যোগাযোগ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে পারে বলেই ওই সময় মামলার শুনানি করেননি বলে জানান। আগে থেকেই BJP এবং শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে যে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। 'এসব পাগলের প্রলাপ' বলে মন্তব্য করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।