কলকাতা: মেট্রোর কাজের জন্য ময়দান চত্বরের গাছ কাটা যাবে না বলে এবার জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ময়দান চত্বরে গাছ কাটার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল আদালত। আমাগী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। ওই সময়ে কোনও গাছ কাঠা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।


মোমিনপুর-এসপ্ল্যানেড মেট্রোর নতুন স্টেশন নির্মাণের জন্য ময়দান চত্বরের প্রায় ৭০০ গাছ কাটার পরিকল্পনা রয়েছে, প্রয়োজনীয় অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও গাছ কাটার কাজে এগিয়ে যাচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ, এই অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি আদালতের দ্বারস্থ হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।  তিনি জানান, প্রয়োজনীয় অনুমোদন রয়েছে কিনা জানতে চেয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে তিন বার তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন জানান। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি।


বৃহস্পতিবার আদালতে সেই আবেদনটির শুনানি চলছিল। তাতেই গাছ কাটার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যে ডিভিশন বেঞ্চ। বলা হয়েছে, মেট্রোর কাজের জন্য আপাতত কোন গাছ কাটতে পারবে না নির্মাণকারী সংস্থা রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড। আগামী নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।


আরও পড়ুন: Mahua Moitra Summoned: মহুয়াকে তলব সংসদের নীতি কমিটির, টাকার বিনিময়ে আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগ


ময়দান চত্বরের গাছ কাটার বিষয়টি নিয়ে এদিন আদালতের মন্তব্য, "ময়দান চত্বর যে শুধুমাত্র একটি খোলা জায়গা নয়, তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, শহরের যে কোনও মানুষই তা স্বীকার করবেন। কলকাতা ময়দান চত্বর এই শহরের ফুসফুস। মানুষের ঘোরার জায়গা ময়দান, প্রচুর মানুষ রোজ এখানে আসেন, প্রাতঃভ্রমণে বেরোন প্রচুর মানুষ।"


বর্তমানে দেশের যে সমস্ত শহরের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকোপ প্রকট হয়ে ধরা দিচ্ছে, তার মধ্যে কলকাতা অন্যতম বলেও এদিন মন্তব্ করে আদালত। আদালত জানায়, কলকাতা শহর সেই সব শহরগুলির মধ্যে অন্যতম, যেখানে তাপমাত্রা ১৯৫০ সাল উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে সংখ্যক গাছ কাটার কথা বলা হচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।


মেট্রোর কাজের জন্য গাছকাটার অভিযোগ যদিও এই প্রথম নয়। এর আগে, বাইপাসেও মেট্রোর কাজ এবং রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছিল। একাধিক বার সেই নিয়ে মামলাও করেছেন পরিবেশকর্মীরা। উন্নয়নমূলক কাজের জন্য যদি গাছ কাটতেও হয়, তার পরিবর্তে সম সংখ্যক বা বেশি সংখ্যক চারাগাছ লাগানোও নিয়ম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না বলে অভিযোগ।