কলকাতা: টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে এবার তলব মহুয়া মৈত্রকে (Mahua Moitra)। সংসদের নীতি কমিটি ডেকে পাঠাল তৃণমূল সাংসদকে। আগামী ৩১ অক্টোবর ডেকে পাঠানো হয়েছে মহুয়াকে। ওই দিন তাঁর বক্তব্য শুনবে সংসদের নীতি কমিটি। অভিযোগকারী বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে (Nishikant Dubey) বৃহস্পতিবার তাদের সামনে হাজিরা দেন। তাঁর বক্তব্য শোনা হয়েছে এদিন। এবার ডাক পড়ল মহুয়ার।
শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে করফাঁকি থেকে শেয়ার বাজারে কারচুপির যে অভিযোগ সামনে এসেছে, সেই নিয়ে সংসদে সরব হয়েছিলেন মহুয়া। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বন্ধুত্বের দরুণ আদানি গোষ্ঠী বিশেষ সুযোগ সুবিধা পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সম্প্রতি সেই নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে সরব হন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত। তাঁর দাবি, প্রতিপক্ষ ব্যবসায়ীর থেকে মোটা টাকা এবং উপহারের বিনিময়েই আদানিদের বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন তোলেন মহুয়া।
এ প্রসঙ্গে ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির নাম টেনে আনেন নিশিকান্ত। তাঁর দাবি ছিল, আদানি গোষ্ঠীকে বদনাম করতে হীরানন্দানি গ্রুপ থেকে ১ কোটি টাকা এবং দামি উপহার নিয়েছিলেন মহুয়া। বিষয়টি নিয়ে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দেন মহুয়ার প্রাক্তন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদরাইও। বৃহস্পতিবার সংসদের নীতি কমিটির সামনে হাজিরা দেন অনন্তও। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, "কমিটির সামনে সত্য কথাই বলেছি আমি। সকলে ভাল ব্য়বহার করেছেন আমার সঙ্গে। যা জানতে চেয়েছেন, সবের উত্তর দিয়েছি।"
আরও পড়ুন: Qatar Death Penalty: চরবৃত্তির অভিযোগে ধৃত, কাতারে ৮ ভারতীয়কে মৃত্যুদণ্ড
মহুয়া যদিও গোড়াতেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। এমনকি ব্যবসায়ী হারীনন্দানিও মহুয়াকে টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। সংস্থার তরফে বিবৃতি দিয়ে বলে হয়, 'আমরা ব্যবসায় থেকে ব্যবসা করি, রাজনীতির ব্যবসা করি না। দেশের স্বার্থে এযাবৎ সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে এসেছি আমরা, আগামী দিনেও তা-ই করব'।
কিন্তু পরে আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় অবস্থান পাল্টান হীরানন্দানি। জানান, 'বেঙ্গল গ্লোবাল সামিটে' মহুয়ার সঙ্গে আলাপ তাঁর, তার পর বন্ধু হয়ে ওঠেন। দেশের বাইরেও একাধিক বার দেখা-সাক্ষাৎ হয়। কথা হয় ফোনেও। মহুয়াকে 'কর্তৃত্ববাদী', 'উচ্চাকাঙ্খী' বলেও উল্লেখ করেন হীরানন্দানি। তাঁকে দিয়ে মহুয়া অনেক কাজও করিয়েছেন বলে জানান।
শুধু তাইউ নয়, হীরানন্দানি আরও জানান, সংসদে আদানিকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে তাঁর কাছ থেকে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন মহুয়া। সেই মতো প্রশ্নমালা এবং তথ্যাদি জোগাড় করেন তিনি। এর পর মহুয়া তাঁকে নিজের সংসদীয় ইমেল আইডিই দিয়ে দেন, যাতে সরাসরি হীরানন্দানিই প্রশ্ন আপলোড করে দিতে পারেন। আদানি গোষ্ঠীর প্রাক্তন কর্মী, সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেও মহুয়া এ ব্যাপারে সাহায্য় পান বলে দাবি করেছেন। দিল্লিতে নিজের বাংলো মেরামত, যাতায়াতের খরচ, বিদেশ সফরের ব্যবস্থাপনা থেকে দামি উপহারও তাঁর কাছ থেকে মহুয়া নিয়েছেন বলে দাবি হীরানন্দানির। যদিও মহুয়ার দাবি, মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে এই হলফনামা দিতে বাধ্য করা হয়েছে হীরানন্দানিকে।