কলকাতা: প্রায় ৮ বছর পর উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে কাটল জট। ১৪ হাজার ৫২টি পদে নিয়োগে সবুজ সঙ্কেত দিল হাইকোর্ট। মেধাতালিকা থেকে বাদ ১ হাজার ৪৬৩ যুক্ত করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের নির্দেশ। চার সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং করে, সুপারিশপত্র দেবে এসএসসি, এমনই নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। (Upper Primary Recruitment)
দীর্ঘ আট বছর পর উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের জট কাটল। অবিলম্বে ১৪ হাজার ৫২ জনকে সুপারিশপত্র দিতে হবে বলে রায় দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকের ১৪ হাজার ৩৩৯টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য। পরে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে মেধাতালিকা যখন প্রকাশিত হয়, তাতে ১৪ হাজার ৫২ জনের নাম ছিল। (Calcutta High Court)
এর পর ২০২১ সালে SSC জানায়, OMR শিটগুলি পুনরায় মূল্যায়ন করে ১ হাজার ৪৬৩ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই বাদ পড়া ১৪৬৩ জন অন্য একাধিক মামলায় যুক্ত হন। আজ হাইকোর্ট জানিয়েছে, ওই ১ হাজার ৪৬৩ জনকে যে প্রক্রিয়ায় বাদ দেওয়া হয়েছিল, তা ঠিক ছিল না। কারণ ইতিমধ্যেই দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কোথায় কত নম্বর পান তাঁরা, তাঁদের ইন্টারভিউ, কাউন্সেলিং, সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে আগেই। ফলে নতুন করে OMR শিট মূল্যায়ন করে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না।
আরও পড়ুন: RG Kar Case: 'আমি ৫ দিন চেয়েছিলাম, আজ ১৬ দিন পার', CBI তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মমতার, সরব অভিষেকও
তাই হাইকোর্ট জানিয়েছে, বাদ দেওয়া ১ হাজার ৪৬৩ জনকে যুক্ত করে ওই ১৪ হাজার ৫২ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে SSC-কে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। পরের চার সপ্তাহে কাউন্সেলিংয়ের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। অধিকাংশ কাউন্সেলিং ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। নতুন করে মেধাতালিকা বেরোলে, প্রয়োজন বুঝে SSC কাউন্সেলিং করাবে SSC. এর পর অবিলম্বে সুপারিশপত্র বিলি করতে হবে। যাতে দ্রুত নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে কাজে যোগ দিতে পারেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এদিন আদালতের নির্দেশের পর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, দুর্গাপুজোর আগেই হাসি ফুটবে কর্মপ্রার্থীদের মুখে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সদিচ্ছাতেই সিলমোহর পড়ল।
দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা কলকাতা হাইকোর্টে ঝুলছিল। প্রায় আট বছর পর বিষয়টির মীমাংসা হল। ১৪ হাজার ৫২ জন সত্ত্বর নিয়োগপত্র হাতে পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে আদালত জানিয়েছে, এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে মামলা আটকে ছিল। ফলে আর যেন দেরি না হয়, কোনও রকম ঢিলেমি যেন না হয়। দ্রুত গোটা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।
২০১৬ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় ২০১১ এবং ২০১৫ সালে টেট উত্তীর্ণরা উচ্চ প্রাথমিকের টেট অংশ নিতে পারবেন। এর পর একাধিক ইস্যুতে মামলা হয়। একসময় মেধাতালিকা বাতিলও হয়ে যায়। পরবর্তীতে আবারও নতুন করে মেধাতালিকা বেরোয়। সেই নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে মামলা পরবর্তীতে ডিভিশন বেঞ্চে এসে ওঠে। তাতেই আপাতত ১৪ হাজার ৫২ জনের মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ এল বিচারপতি তপৌব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ থেকে।