সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : দুর্গাপুজোর অনুদান সংক্রান্ত মামলার (Durga Puja Donation Case) শুনানি শেষ। রায়দান স্থগিত রেখেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) দায়ের হয় ৫টি জনস্বার্থ মামলা।


রাজ্যের সিদ্ধান্ত


৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে দুর্গাপুজোর অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নেজাতি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) পুজো অনুদান ক্লাবপ্রতি ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ হাজার করার ঘোষণা করেছিলেন। এর জন্য সরকারি কোষাগার থেকে খরচ হবে ২৫৮ কোটি টাকা। 


হাইকোর্টে মামলা


মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত খরিজের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় ৫টি জনস্বার্থ মামলা। মামলাকারীরা প্রশ্ন তোলেন, যেখানে আদলতের নির্দেশমতো সরকারি কর্মীদের DA দেওয়া হয়নি, সেখানে কেন পুজোয় এইভাবে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত? কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানি বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। স্থগিত রয়েছে মামলার রায়দান।  


তুমুল সওয়াল-জবাব


এদিন মামলাকারীদের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সরকারের পক্ষে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya) প্রশ্ন তোলেন, মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি দুর্গাপূজায় অনুদানের নামে টাকা দিয়েছেন। একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অনুদান দেওয়া সংবিধান বিরোধী। ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে হেরিটেজের তকমা দিয়েছে মানেই রাজ্য সরকার কোষাগার থেকে টাকা খরচ করতে পারে না। কলকাতা হাইকোর্ট ইমাম ভাতা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল, যাতে নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ না হয়। 


রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, এই টাকা মূলত তিনটি কাজে ব্যবহার করা হবে। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য, রাজ্যের পর্যটনের প্রচারের জন্য এবং এলাকার মানুষের সঙ্গে পুলিশের সুসম্পর্ক স্থাপনের জন্য। 


এরপর প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এই টাকা যে সরকারের ঠিক করে দেওয়া নির্দিষ্ট খাতেই ব্যয় করা হবে সেটা নিশ্চিত করা যাব কীভাবে? অ্যাডভোকেট জেনারেল তখন জানান, ব্যয়ের সার্টিফকেট এবং বিল - ভাউচার দেখে নিশ্চিত হওয়া যাবে। যেহেতু বাজেটে বরাদ্দ আছে তাই অডিট করাতেই হবে। ৯০ শতাংশের বেশি ক্লাব ব্যয়ের সার্টিফিকেট দিয়েছে। ব্যয়ের সার্টিফিকেট না দিলে টাকা দেওয়া হবে না। 


আরও পড়ুন- শুভেন্দুর মিছিলে পাথর ছোড়ার অভিযোগ, কালো পতাকা, বিক্ষোভ, ধুন্ধুমার তারকেশ্বরে